বিজ্ঞাপন

শান্তির জন্য যা করণীয় বাংলাদেশ করবে: প্রধানমন্ত্রী

May 29, 2023 | 2:09 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আগামী দিনে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি সংঘাতে নয়। বাংলাদেশ সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করে। সেই শান্তির জন্য যা যা করণীয় বাংলাদেশ তা করবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৩ উদযাপন এবং বিশ্ব শান্তিরক্ষায় শাহাদাত বরণকারী ও আহত সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

যারা বিশ্ব শান্তির জন্য অকাতরে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রেখেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা।

এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সর্বমোট ১৬৭ জন শান্তিরক্ষী শহিদ হয়েছেন। বীর শান্তিরক্ষীদের পরিবারবর্গকে গভীর সমবেদনা জানান তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের যে সব শান্তিরক্ষী সফলভাবে শান্তিরক্ষা মিশন শেষ করেছেন, যারা বর্তমানে মিশনে নিয়োজিত আছেন এবং ভবিষ্যতে যারা অংশগ্রহণ করবেন তাদের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করেন।

বিজ্ঞাপন

২০২৩ সালের আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের প্রতিপাদ্য- Peace Begins with me অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে জাতির পিতার দেখানো পথে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবো এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব উপহার দেবে- আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যে বাংলাদেশকে জাতির পিতা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সে পথেও আমরা অগ্রসর হচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশের দারিদ্র্যের হার কমানো, হত দরিদ্রের হার কমানো, ভূমিহীন গৃহীনদের মানুষের বসবাসের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলবো। সেটিই আমাদের লক্ষ্য। আমরা আর দুইদিন পরেই বাজেট দিতে যাচ্ছি। ২০০৬ সালে এই বাজেট ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা।  এখন আমরা বাজেটে সাত লাখ কোটি টাকার উত্তরণ ঘটাতে যাচ্ছি।’

কাজেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে আমাদের প্রতিটি বাহিনী, প্রতিটি মানুষেরই জীবনমান এবং তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ব্যবস্থা করে দিচ্ছি বলে জানান তিনি।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছি। পদ্মাসেতুর মতো সেতু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করে সারাবিশ্বকে দেখিয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন. আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না; তা আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না।’

২০০৮ সালের পর নির্বাচনের পর থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত বলেই আজকে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা নিশ্চিত হয়েছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ আর কখনও দরিদ্র দেশ হিসেবে কারও কাছে নতজানু হয়ে থাকবে না বলে দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত করা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন। প্রযুক্তির প্রসার এবং অগ্রযাত্রায় অপশক্তির নতুন নতুন হুমকি বাড়ছে। শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ২০২৬ সাল থেকে আমরা তা বাস্তবায়ন করব। ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে আগামী দিনে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি সংঘাতে নয়। বাংলাদেশ সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করে। সেই শান্তির জন্য যা যা করণীয় বাংলাদেশ তা করবে।’

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয় ২৯ মে। ২০০৩ সাল থেকে দিবসটি উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি উদ্‌যাপন হচ্ছে।

বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী অবিরাম কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে।

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন