বিজ্ঞাপন

অনির্দিষ্টকাল জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা

July 9, 2023 | 5:36 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

খুলনা: জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফ ৫০ বছরসহ ৩ দফা দাবিতে ১ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৯ জুলাই) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব শেখ ফরহাদ হোসেন।

তিন দফা দাবি হলো— জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফ ৫০ বছর করতে হবে, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করতে হবে, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের কমিশনের বিষয়ে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর ডিলার্স কমিশন বৃদ্ধির দাবি দীর্ঘদিনের। বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। জ্বালানি তেলের মূল্য যখন ৬০ টাকা ছিল তখন যে হারে কমিশন দেওয়া হতো, তেলের মূল্যে দ্বিগুণ হওয়ার পরও প্রায় একই হারে কমিশন দেওয়া হচ্ছে। অথচ তেল ক্রয়ে ডিলার/এজেন্টদের দ্বিগুণ ইনভেস্ট করতে হচ্ছে, একই সঙ্গে জিনিসপত্রের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে জ্বালানিখাতের কর্মচারী বেতন অনেকাংশ বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়— সবধনের লাইসেন্স ফি প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে, বিদ্যুতের মূল্যে বৃদ্ধিসহ ট্যাংকলরির পার্টসের মূল্যে দ্বিগুণ হয়েছে। অটো গ্যাস স্টেশনে (LPG) প্রতি লিটার ৪৬ দশমিক ৫০ টাকা বিক্রয় করে ৮ টাকা অর্থাৎ ১৭ শতাংশ কমিশন দেওয়া হচ্ছে। সেখানে ১৩০ টাকা পেট্রোল/অকটেন বিক্রয় করে ৪ টাকা অর্থাৎ ৩ শতাংশ কমিশন দেওয়া হচ্ছে। ফলে এলপিজি থেকে প্রায় তিনগুণ বেশি অর্থ বিনিয়োগ করে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম কমিশন দেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় অবস্থান করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়— জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির পর থেকে তেল বিক্রয় অর্ধেকে নেমে গেছে। ফলে আয়ও কমে গেছে। কারণ বিক্রয়ের ওপরই আমাদের কমিশন নির্ভরশীল। অথচ সংশ্লিষ্টরা সবকিছু অবগত আছেন। আমাদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করে কমিশন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি ও সুপারিশ পেশ করে শুধু কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। জ্বালানি ব্যবসায়ীরা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছেন। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভুত এ সমস্যা ও সংকটের আবর্ত থেকে বের হয়ে আসার জন্য আজকের সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে তেল বিক্রয়ের ওপর ডিলার্স কমিশন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্যে হ্রাস/বৃদ্ধির সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলার্স কমিশন ও ট্যাংকলরি ভাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়— একমাত্র জ্বালানি তেল ক্রয় এবং বিক্রয় সরকার নির্ধারিত অভিন্ন মূল্যে হয়ে থাকে। জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর সরকার নির্ধারিত হারে কমিশন প্রদান করে থাকে। ফলে ফিলিং স্টেশনের আয় বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। জ্বালানি ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে জ্বালানি তেল ক্রয়পূর্বক সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় করে স্বল্প কমিশন পেয়ে থাকে। ফলে জ্বালানি ব্যবসায়ীরা শতভাগ কমিশন এজেন্ট। তাই জ্বালানি তেল বিপণন কাজে নিয়োজিতদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে গেজেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অবস্থান/মর্যাদা কমিশন এজেন্ট ঘোষণার জোর দাবি জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে দ্বৈত লাইসেন্সসহ বিভিন্ন আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এরূপ হলে সরকারি বিভিন্ন দফতর কর্তৃক ফিলিং স্টেশন সংক্রান্ত এসআরও এককভাবে জারির প্রবণতা হ্রাস পাবে।

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব বিপিসি বা জ্বালানি কোম্পানি বহন করবে। এই সব সমস্যার প্রতিকারের স্বার্থে এবং তিন দফা দাবি আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে আগামী ১ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত সব ব্যবসায়ীরা জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহনে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা বিভাগীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিরাউল ইসলাম, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি খুলনা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, সহ-সভাপতি মোড়ল আব্দুস সোবাহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান খান, শেখ জামিরুল ইসলাম, শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, রফিকুল ইসলাম নন্টু, কামাল হোসেন প্রমুখ।

সারাবাংলা/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন