বিজ্ঞাপন

জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল সঠিক ব্যবস্থাপনার দাবিতে পরিবেশবাদীদের চিঠি

October 27, 2023 | 10:27 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থাপনায় ট্রাস্ট তহবিল পরিচালনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ১০ জন মানবাধিকার কর্মী ও পরিবেশবাদী এই চিঠি পাঠান।

তারা হলেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল,
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নিজেরা করি এর সমন্বয়কারী খুশি কবীর, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)
নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ব্লাস্টের অনারারি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সারা হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন,
উন্নয়ন অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক মাহা মির্জা এবং লিডার্স-এর নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ক্লাইমেট ভালনারেবল ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ১৯২টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশে গত দুই দশক ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সুস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু সূচক-২০২১ এর প্রতিবেদনে বলা হয় গত ২০ বছরে বাংলাদেশে ১৮৫টি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বড় দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে রয়েছে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, পাহাড় ধ্বসের মতো দুর্যোগ। এতে ১১ হাজার ৪৫০ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৩৭২ কোটি মার্কিন ডলার।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সক্ষমতা গড়তে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯-১০ অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল গঠন করে। প্রতি বছর এ তহবিলে জাতীয় বাজেটের কিছু অংশ জমা হয় এবং এ তহবিল থেকে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে জনস্বার্থমূলক কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় যা জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জলবায়ু তহবিলের ৫০৮ কোটি টাকা ২০১৫ সালে ফারমার্স ব্যাংকে (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) আমানত হিসেবে রাখে। এফডিআরকৃত অর্থ ২০১৬ সালেই জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিলে ফেরত আসার কথা থাকলেও গত ৭ বছরে এ তহবিলে মাত্র ৭৮ কোটি টাকা এসেছে।

এর ফলে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ৯ শতাংশ হারে সুদে বর্তমানে সুদে আসলে জলবায়ু তহবিলের বকেয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৭ কোটি টাকা। এর অর্থ হচ্ছে জলবায়ু তহবিলের যেই টাকা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মধ্যে থাকা জনগণের সুরক্ষায় ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল তা ব্যবহৃত হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশেষ পরিদর্শনে ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) কর্তৃক ঋণ বিতরণে ব্যাংকিং বিধিমালার চরম লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ঋণ অনুমোদনে ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালকদের জড়িত থাকার বিষয়টিও খুঁজে পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিজ্ঞাপন

এমতাবস্থায়, এফডিআরকৃত টাকাগুলো জলবায়ু তহবিলে সুদে আসলে ফেরত আসার সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অর্থ যা বিপন্ন জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে পারতো তা সরকারি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে জনগণের কোনও কাজে আসছে না। জনগণের এ করের টাকার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে জলবায়ু তহবিলের মাধ্যমে সুরক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানায় পত্রে স্বাক্ষরকারীগণ।

পাঠানো এই পত্রের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন পত্রে স্বাক্ষরকারীরা। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জলবায়ু তহবিলের টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত আসবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় তা ব্যবহৃত হবে বলে তারা আশা করেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন