বিজ্ঞাপন

ঝুঁকিপূর্ণ গুলশান শপিং সেন্টার ভেঙে ফেলার নির্দেশ বহাল

January 22, 2024 | 3:36 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত গুলশান শপিং সেন্টার ভেঙে ফেলার নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে সোমবার (২২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবাদুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এর আগে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ৩০ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। লিজ গ্রহিতাদের নিজ খরচে তা ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন সাজেদ সামী। রাজউকের পক্ষে ছিলেন মাজেদুল ইসলাম মিয়াজী। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭৫ সালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কাছ থেকে গুলশান শপিং সেন্টারের জায়গা লিজ নেয় বানীচিত্র ও চলচ্চিত্র লিমিটেড নামে দুটি কোম্পানি। পরে ২০০৬ সালে এই শপিং কমপ্লেক্স মেরামত ও নতুন ভবন তৈরির জন্য শান্তা হোল্ডিং লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে চুক্তি করে বানীচিত্র ও চলচ্চিত্র লিমিটেড কোম্পানি।

চুক্তি অনুযায়ী শান্তা হোল্ডিং লিমিটেডের ছয় মাসের মধ্যে মেরামত সম্পন্ন করে বানীচিত্র ও চলচ্চিত্র লিমিটেডের কাছে পজিশন হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু নানা আইনি জটিলতায় শান্তা হোল্ডিং লিমিটেড তা করতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

পরে ২০২৩ সালে ২৩ জুলাই রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত গুলশান শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সিলগালা করে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ‘গুলশান শপিং সেন্টার’-এর হোটেল, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান।

এর আগে ‘গুলশান শপিং সেন্টার’-এর জরাজীর্ণ ভবন ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার কারণে ২০২১ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর শপিং সেন্টারটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ডিএনসিসিকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেয়।

অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন বলেন, শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনও ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে দোকান মালিকদের ভবন খালি করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা সেটি করেনি। ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত এই ভবন ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, বারবার সতর্ক করা হলেও ব্যবসায়ীরা পরিত্যক্ত ভবনটি খালি করছে না। খালি করার জন্য একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছে। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সুপারিশ বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯, তৃতীয় তফসিল-১৭, ইমারত নিয়ন্ত্রণ ইমারত সম্পর্কিত প্রবিধানের ১৭.১ ও ১৭.২ অনুযায়ী জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি সিলগালা করা হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ও নিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ প্লাটুন পুলিশ, ১ প্লাটুন এপিবিএন ও অন্যান্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ উপস্থিত হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মার্কেটটির গেটসমূহ তালাবদ্ধ ও সিলগালা করা হয়। এ সময় মাইকিং করা হয় ও মালামাল সরানোর জন্য নিদের্শনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিদ্যুৎ,গ্যাস ও অন্যান্য সেবা সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এ অবস্থায় এই শপিং সেন্টার ভেঙে ফেলার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বরাবরে (ডিএনসিসি) বানীচিত্র লিমিটেড ও চলচ্চিত্র লিমিটেডের পক্ষে চিঠি দেয় শান্তা হোল্ডিং লিমিটেড। সে চিঠিতে সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে শান্তা হোল্ডিং লিমিটেড।।

এরপর শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ৩০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বানীচিত্র লিমিটেড ও চলচ্চিত্র লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক জে আই আমিন লিভ টু আপিল দায়ের করেন।

আজ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে বানীচিত্র লিমিটেড ও চলচ্চিত্র লিমিটেডের পক্ষে শান্তা হোল্ডিং লিমিটেডকে নিজ খরচে ৩০ দিনের মধ্যে গুলশান শপিং সেন্টারটি ভেঙে ফেলতে হবে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন