বিজ্ঞাপন

‘ঢাকায় দুর্ভেদ্য দুর্গ’ গড়ে তোলার নির্দেশ ফখরুলের

April 6, 2024 | 9:09 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার হটানোর আন্দোলনে ‘ঢাকায় দুর্বোধ্য দুর্গ’ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা লেডিস ক্লাবে ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর নেতাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকা মহানগর হচ্ছে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্যবস্তু ঢাকা। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ভয়াবহ দানবদেরকে পরাজিত করা। সেই কারণে ঢাকার মহানগরের দায়িত্ব অনেক বেশি। আমি অনুরোধ করব ঢাকাকে সেইভাবে গড়ে তোলেন যেন ঢাকা দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত হয়। এই দুর্গ যেন কেউ ভাঙতে না পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সেইভাবে আমাদেরকে এখানে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘‘সারাদেশের মানুষ কত কষ্টে আছে। কয়েকদিন আগে আমি আমার জেলা ঠাকুগাঁওতে গিয়েছিলাম। আমি দেখেছি তারা ভয়াবহভাবে দুঃখ-কষ্টে জীবনযাপন করছে। অথচ তাদের চোখে-মুখে কোনো হতাশার ছাপ আমি দেখি নাই। এতো অত্যাচার নির্যাতনের পরেও তারা সুন্দর আছে, সঠিক আছে, দৃঢ়চেতা আছে। আমাদেরকে তারা এই কথা বলেছে যে, আপনারা সঠিক নির্দেশনা দেন, সঠিক কর্মসূচি দেন তাহলে আমরা আবার সামনের দিকে এগিয়ে আগের মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন সবেচেয়ে মনোনিবেশ করতে হবে সংগঠনের প্রতি, সবচেয়ে মনোনিবেশ করতে হবে জনগণের যে সাহস যেটাকে বাড়িয়ে তুলতে এবং শত্রুকে পরাজিত করবার জন্য কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এই কথাগুলো আপনারা মনে রাখবেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলন বিএনপির আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন জাতিকে রক্ষা করবার আন্দোলন। আমাদের চলমান আন্দোলন গণতন্ত্রের জন্য, আমাদের চলমান আন্দোলন ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবার জন্য। আমাদের চলমান আন্দোলন আমাদের প্রিয় রাষ্ট্রকে সকল ধরনের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন বাংলাদেশে পরিণত করবার জন্যে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তখনই আমরা জাতিকে রক্ষা করতে পারব যখন এই জনসমর্থনহীন একেবারে ম্যান্ডেটবিহীন সরকারকে সরিয়ে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। আমরা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছিলাম একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য যা আজকে সম্পূর্ণ ধবংস হয়ে গেছে। আমাদের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে, কথা বলার অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে, সংবিধান তছনছ করেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার যা আগে কখনো দেখিনি আমাদের সন্তানদেরকে গুম করে দিয়েছে। ১২/১৩ বছর হয়ে গেছে এখনও আমরা তাদের খবর জানি না। আমাদের ছেলেদের পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে, বিনা বিচারে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি বড় বিজয়ের জন্য, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আমাদের নবী রসুল্লাহ (সা.) একদিনে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে সক্ষম হননি। দীর্ঘকাল লেগেছে তার এই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবার জন্য। একদিনের ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়নি সব জায়গায়।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফেরাউন-নমরুদ-হিটলারের মতো কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো যখেই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা চেষ্টা করেছে সারাজীবন তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে। আমরা দেখেছি অতীতে তাদের নেতা চেষ্টা করেছে বাকশাল কায়েম করে জনগণকে পুরোপুরিভাবে বন্দি অবস্থায় নিয়ে আসতে। আজকে আবার তারা (আওয়ামী লীগ) নতুন কায়দায় শুরু করেছে একদলীয় সরকার বাকশাল। আসুন আজকে আমরা এই শপথ গ্রহণ করি, আল্লাহর কাছে এই দোয়া চাই যেন, আল্লাহ সেই তৌফিক দেন, সেই শক্তি দেন যেন আমরা সেই শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আন্দোলনে সংগ্রামে তাদেরকে পরাজিত করতে পারি।’

ইফতার মাহফিলে ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার কয়েক সহস্রাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। ইফতারের আগে মুহূর্তে লন্ডন থেকে তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও দুই মহানগরের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হকের যৌথ সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষে এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুনা, চৌধুরী আলমের ছেলে আবু সাদাত শাওন চৌধুরী, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, পারভেজ হোসেনের মেয়ে হৃদি, আনোয়ার হোসেন মাহবুবের মেয়ে রাইসা তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন