বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার থেকে ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দিচ্ছে ‘পাঠাও’: র‌্যাব

June 24, 2018 | 1:57 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: র‌্যাবের মাদকবিরোধী অভিযানে ঢাকার ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে পড়লেও কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেরা উদ্যোগী হয়েই ঢাকায় ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে। আর ঢাকায় মাদক আনতে রাইড শেয়ারিং অ্যাপস ‘পাঠাও’কে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে.কর্ণেল এমরানুল হাসান।

রোববার (২৪ জুন) সাড়ে ১১টায় র‌্যাবের কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

র‌্যাব-৩ এর কর্মকর্তা জানান, অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩২৯ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। এর মধ্যে ১৫০ জনকে নিয়মিত মামলা ও ১৭৯ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চলমান অভিযানের ফলে ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এখন কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে ঢাকায় মাদক পৌঁছে দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এমরানুল হাসান জানান, গতকাল (২৩ জুন) রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১২ নং সেক্টরের ১৮ নং সড়কের ১১ নং বাসা থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন, কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ী ইফতেখারুল ইসলাম (২৫), ওই ভবনের কেয়ারটেকার ও উখিয়ার বাসিন্দা অলি আহম্মেদ (২৪), ওষুধ কোম্পানির ইনফরমেশন অফিসার মোস্তফা কামাল এবং পাঠাও চালক রানা আহম্মেদ ওরফে রাজু (২৫)। এ সময় ২০ হাজার পিস ইয়াবা, ৮টি মোবাইল ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা।

কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে দেওয়ার বিষয়ে পাঠাওয়ের চালকদের ব্যবহার করা বিষয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পাঠাও এর চালকদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদক পরিবহনের মতো গুরুতর তথ্য তারা পেয়েছেন। এ নিয়ে পাঠাওয়ের সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

এমরানুল হাসান জানান, গ্রেফতার হওয়া কয়েকজনের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া গেছে। ইফতেখারুল ইসলাম নামের একজন জানিয়েছে সে কক্সবাজারের উখিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত উখিয়ার স্থানীয় কিছু যুবকের বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখে ইয়াবা ব্যবসায় উৎসাহিত হয়। কারণ তার ধারণা ইয়াবা ব্যবসায় দ্রুত লাভবান ও বিলাসবহুল জীবনযাপন করা যায়। সে নিজে মাদক ব্যবসায় জড়ানোর পাশাপাশি কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় ‍যুবক ও রোহিঙ্গাদের ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে যেতে উৎসাহিত করে। কক্সবাজার থেকে আনা ইয়াবা অবৈধভাবে ঢাকার উত্তরা হতে আশেপাশের মাদক ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করার কাজ নিয়ন্ত্রণ করত ইফতেখারুল।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, গ্রেফতার অলি আহম্মেদ জানান, তার বাড়িও কক্সবাজারের উখিয়া থানার রাজাপালং গ্রামে। উত্তরার ফজিলত প্রোপার্টিজ নামে একটি নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠিানের সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। অলি আহম্মেদ নিজের নিয়ন্ত্রিত ওই ভবনে কক্সবাজারের ইয়াবা রাখা হতো। এবং তার সহায়তায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌছে যেত।

গ্রেফতারকৃত মোস্তফা কামাল জানান, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা শরীফ ফার্মাসিউটিক্যালসের মেডিকেল ইনফরমেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত। মোটা অঙ্কের টাকার লোভে ঔষধ বিপণন ও সরবরাহের সাথে যুক্ত থাকার পাশাপাশি তিনি ইয়াবা পরিবহনের কাজেও যুক্ত হয়ে পড়েন। কক্সবাজার থেকে ইয়াবা ঢাকায় একটি চালান পৌঁছাতে পারলেই তিনি পেতেন ২০ হাজার টাকা।

এছাড়া রানা আহম্মেদ রাজু মূলত রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পাঠাও এর একজন রাইডার। তিনি পাঠাও এর রাইড শেয়ার দেওয়ার পাশাপাশি ইয়াবা পরিবহন করে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দিতো।

লে. কর্ণেল এমরানুল হাসান বলেন, ‘কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে ঢাকার কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর যোগসাজশের তথ্য আমরা পেয়েছি। তাদের নামও জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পাঠাও চালকদের কয়েকজনের তথ্য আমরা পেয়েছি। অভিযুক্ত কয়েকজন চালকের ব্যাপারে তথ্য পেতে আমরা পাঠাওয়ের সাথে যোগযোগ করবো।’ মাদক পরিবহনে পাঠাও চালক ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের ব্যবহারের তথ্য পাওয়ায় এ সংক্রান্ত মামলাটি র‌্যাব-৩ তদন্ত করবে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শ্রমিকদের ৪২০০ কোটি টাকা প্রতারক চক্রের পেটে

সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন