বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের জন্য হবে বড় সাশ্রয়

May 9, 2018 | 1:19 pm

।।আবুল হাসান।।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্নটি বাস্তবে রূপ পাবে আর মাত্র একদিন পর ১০ মে (বাংলাদেশ সময় ১০ মে দিবাগত রাত ২টা ১২ মিনিট)। মহাকাশে পাড়ি দেবে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ (BS-1)’ । যোগাযোগের এক নতুন দ্বার, কিংবা দীগন্ত নয়… মহাকাশ উন্মোচিত হবে বাংলাদেশের জন্য।
ফ্রান্সের থালস অ্যালেনিয়া স্পেস ৩৫০০কেজি ওজনের স্যাটেলাইটটি তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে সেটি উৎক্ষেপণ করা হবে।

বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ দেখতে কেনেডি স্পেস সেন্টারের আমন্ত্রণ

‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ ১৬০০ মেগাহার্টজ ক্ষমতাসম্পন্ন মোট ১৪টি সি-ব্যান্ড ও ২৬টি কিউ (কেইউ) ব্যান্ডসহ মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে এবং এটির আয়ু হবে ১৫ বছর। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের অবস্থান হবে ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। অবস্থান করবে ভু-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬০০০ কিলোমিটার দুরত্বে।

বিজ্ঞাপন

ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম), স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সম্প্রচার এবং ইন্টারনেটসহ আরও নানাবিধ কমিউনিকেশন সেবায় ব্যবহৃত হবে স্যাটেলাইটটি।

বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচারের জন্য বর্তমানে যেসকল স্যাটেলাইট ব্যবহার করছে তাদের এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার কিছু অংশ কাভারেজ বা ফুটপ্রিন্ট-এর আওতায় রয়েছে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থানের ফলে এই স্যাটেলাইটে বাংলাদেশ থেকে সম্প্রচারিত টিভি/রেডিও চ্যানেলগুলো মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশসহ কয়েকটি দেশ সরাসরি ডাউনলিংক করতে পারবে না। তবে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা মহাদেশের ফুটপ্রিন্ট কাভারেজ বড় ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। প্রাইম কাভারেজের আওতাভুক্তদেশগুলো স্যাটেলাইট সেবার চাহিদা পূরণ করতে পারলে বা তাদের কাছে ক্যাপাসিটি বা ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে সহজেই স্যাটেলাইটটিকে লাভজনক করা সম্ভব।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি অরবিটে পৌঁছতেই তিন সপ্তাহ লাগবে উৎক্ষেপণের পর ইন-অরবিট টেস্ট বা আইওটি শেষে ৩ মাস পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন

গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশনটি ব্যাকআপ স্টেশনে হবে। মূলতঃ কাজ হবে জয়দেবপুরের স্টেশনেই। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সি-ব্যান্ড ক্যাপাসিটি বাংলাদেশি চ্যালেনগুলোর কাছে ভাড়া দিয়েও বড় অংকের রেভিনিউ অর্জন করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে সরকারি/বেসরকারিভাবে কেন্দ্রীয় টেলিপোর্ট স্থাপনের মাধ্যমে (এমসিপিসি) সম্প্রচারের ব্যবস্থা করলে লাইন অব সাইট (কয়েকটি টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে) নিয়ে কোনো জটিলতা থাকবেনা, ব্যান্ডউইথ খরচ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে, নতুন টিভি চ্যানেলগুলোর নিজস্ব আপলিংক ফ্যাসিলিটি স্থাপন, ম্যানপাওয়ার এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচে অনেক সাশ্রয় হবে এবং বিদেশে স্যাটেলাইট বিল পাঠানো প্রয়োজন হবেনা। একইভাবে কিউ (কেইউ) ব্যান্ড ক্যাপাসিটি দেশি/বিদেশি ডিটিএইচ(ডাইরেক্ট টু হোম) অপারেটদের ভাড়া দিয়েও ব্যাপক পরিমান টাকা আয় করা সম্ভব।

বাংলাদেশের সামনে চলা পথ গতিময় করুক, এই শুভ কামনায়। গুড লাক বাংলাদেশ, গুড লাক বঙ্গবন্ধু-১।

আবুল হাসান: ব্রডকাস্ট হেড, গাজী টেলিভিশন, hasansnet@gmail.com

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন