বিজ্ঞাপন

ভাইয়ের সাজা মাথায় নিয়ে ৪ মাস জেল খেটে মুক্ত অমর

November 11, 2018 | 6:09 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিনা অপরাধে চারমাস জেল খাটার পর পুলিশের সহযোগিতায় ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছেন অমর দাশ নামে এক ব্যক্তি। আইনি লড়াই শেষে রোববার (১১ নভেম্বর) অমর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। মুক্ত হওয়ার পর সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন তাকে ফুল দিয়ে কারাফটকে স্বাগত জানান।

অস্ত্র মামলায় দণ্ডিত হয়েছিলেন অমরের চাচাতো ভাই স্বপন দাশ। তিনিই কৌশলে র‌্যাবকে বিভ্রান্ত করে অমরকে ফাঁসিয়ে দিয়েছিলেন। গত ৫ জুলাই অস্ত্র মামলায় সাজামূলে অমরকে গ্রেফতার করেছিল চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানা পুলিশ।

কারাবন্দি অমর পুলিশের সহযোগিতায় হাইকোর্ট বিভাগে রিট করেন। গত ২৮ অক্টোবর বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অমরকে সাজার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

স্বপন দাশ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর বামনডেঙ্গা গ্রামের দেবেন্দ্র জলদাশের ছেলে। অমর দাশ দেবেন্দ্র’র ভাই রেবতী জলদাশের ছেলে।

নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, অমরকে গ্রেফতারের পর আমরা জানতে পারি, অস্ত্র মামলায় দণ্ডিত হয়েছে তার চাচাতো ভাই স্বপন। সে কৌশলে মামলার নথিপত্রে নিজের নাম অমর বলেছে। এতে নিরাপরাধ অমর ফেঁসে যায়। এই তথ্য পাওয়ার পর আমরা স্বপনকেও গ্রেফতার করেছি। স্বপন স্বীকার করেছেন তিনি তার ভাইকে ফাঁসিয়েছিলেন। তারপর আমরা নিরাপরাধ অমরকে মুক্ত করার জন্য তাকে আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করি।

তিনি আরও জানান, ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের পর স্বপনসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। স্বপনের পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তিনি পঙ্গু হয়ে যান। তাদের ডাকাত উল্লেখ করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দু’টি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তিন বছর জেল খেটে ২০০৭ সালে জামিনে বের হন স্বপন।

বিজ্ঞাপন

সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সারাবাংলাকে বলেন, মামলা দায়েরের সময় স্বপনকে যখন তার নাম জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন সে অমর দাশ বলেছিল। স্বাভাবিকভাবেই দু’টি মামলার এজাহারে তার নাম ছিল অমর দাশ। ২০১৭ সালে অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং বিস্ফোরক আইনে ৫ বছরসহ মোট ২২ বছরের সাজা হয় স্বপনসহ অন্য (অমর) আসামিদের। এজাহারে স্বপনের (অমর) ঠিকানা লেখা আছে সদরঘাট থানা এলাকায়। জামিনে বেরিয়ে স্বপন পালিয়ে গেলে সাজা পরোয়ানা আসে সদরঘাট থানায়।

গত ৫ জুলাই অমরকে গ্রেফতার করা হয়। আকস্মিক গ্রেফতারে অমর বিস্মিত হয়। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম, অমর অভিনয় করছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আমরা কারাগারে গিয়ে ২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামির শনাক্তকরণ চিহ্ন মেলাই। তখন ছবি সংরক্ষিত থাকত না। শনাক্তকরণ চিহ্নে মিল পাওয়া যায়নি। এরপর আমরা ওই মামলায় কারাগারে থাকা আসামি মতিনকে দিয়ে অমরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করি। মতিন জানান, ২০০৪ সালে গ্রেফতার হওয়া আসামি (স্বপন) আর অমর আলাদা ব্যক্তি।

অমরের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার পর গত ২৩ আগস্ট স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর স্বপন পুরো বিষয় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এরপর অমরকে মুক্ত করতে পুলিশ আইনি লড়াইয়ের উদ্যোগ নেয়, বলেন মুহাম্মদ রুহুল আমীন।

সারাবাংলা/আরডি/এটি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন