বিজ্ঞাপন

ফায়ারম্যান সোহেল রানার পরিবারের এখন কী হবে?

April 8, 2019 | 11:16 pm

কিশোরগঞ্জ: সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ফায়ারম্যান সোহেল রানার মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শুধু বাড়ি নয়, সোহেল রানার জন্য কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চৌগাঙ্গা ইউনিয়নের গোটা কেরুয়াইল গ্রামেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৮ এপ্রিল) কেরুয়াইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এসব দৃশ্য। দরিদ্র পরিবারটির ভরসা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটির মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না গ্রামের মানুষ। পরিবারটিকে কী বলে সান্ত্বনা দেবেন, সেটাই বুঝতে পারছেন না তারা। স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে পাড়া-প্রতিবেশিদের কাঁদতে দেখা যায়। স্বজনরা বলছেন, দেশের জন্য প্রাণ দিলেও তাদের পুরো পরিবারটির নিঃস্ব হয়ে গেছে।

জানা গেলো, তিন ভাইয়ের পড়াশোনা আর পুরো পরিবারের খরচ, সবই ছিল সোহেল রানার  কাঁধে। তাছাড়া জরাজীর্ণ বাড়িটি ভেঙে নতুন আরেকটি বাড়ি করার কথাও চলছিল। পরিবার থেকে সোহেলকে বিয়ে করতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ভাইদের প্রতিষ্ঠিত না করে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি।

বিজ্ঞাপন

চার ভাইয়ের মধ্যে সোহেল ছিলেন সবার বড়। ছোটভাই রুবেল ও উজ্জ্বল স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। সবার ছোটভাই দিলুয়ার আগামী বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা দেবে। তাদের সবার আশা ও ভরসার জায়গা ছিল তাদের প্রিয় বড় ভাই সোহেল।

সোহেলের ভাইরা জানান, ছুটি কাটিয়ে গত ২৩ মার্চ কর্মস্থলে ফিরে যান সোহেল রানা। যাওয়ার আগে তিন ভাইকে ভালোভাবে পড়াশোনার করা কথা বলে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা না করতে। তিনি বেঁচে থাকলে সবই হবে। পয়লা বৈশাখ বাড়িতে ফিরে সবাইকে নিয়ে বৈশাখী উৎসব করবেন। কিন্তু সেসবের কিছুই আর সত্যি হবে না।

বাবা নূরুল ইসলাম অসুস্থ, মায়ের শরীরেও বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। এরমধ্যেই দুর্ঘটনার পড়েন সোহেল। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানোয় বাবা-মা দুজনই আশা করছিলেন তাদের সন্তান সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে।

বিজ্ঞাপন

২০১৫ সালে ফায়ারম্যান হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন সোহেল। সর্বশেষ কাজ করতেন কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনে। গত ২৮ মার্চ  রাজধানীল বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার কাজ চালাতে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হন সোহেল।

গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া দুইটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফনের কথা রয়েছে।

সারাবাংলা/এসএমএন

বিজ্ঞাপন

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন