বিজ্ঞাপন

ব্যালটে ভোট চায় বিএনপি, ইসিকে ফখরুলের চিঠি

January 21, 2020 | 2:27 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণের জন্য লিখিত দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়। এদিন বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাকক্ষে কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এসময় কমিশনের কাছে ফখরুলের চিঠি পৌঁছে দেয় ওই প্রতিনিধিদল।

চিঠিতে তিনি জানান, গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ এর উপনির্বাচনের বিস্তারিত চিত্র দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যা আপনারাও অবগত আছেন বলে মনে করি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত এই চিত্র ইভিএম, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সম্পর্কে আমাদের দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক দাবিকে আবারো পাকাপোক্ত করেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি ইভিএম সম্পর্কে আমাদের দলের বক্তব্য এবং দাবি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতিকে অবগত করেছি। ৬ জানুয়ারি আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আমাদের দলের দুই মেয়র প্রার্থীসহ বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগরের আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি দাবিনামা আপনাদেরকে (নির্বাচন কমিশন) পেশ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে এই পত্র আবারও আপনাদের কাছে পেশ করছি। একটি স্বচ্ছ ও শুদ্ধ নির্বাচন ব্যবস্থা ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অর্থহীন। গণতন্ত্র কার্যকরী করার জন্যই ঐ ভোট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমাদের সংবিধান নির্বাচন কমিশনের মতো একটি প্রতিষ্ঠান জন্ম দিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল তার চিঠিতে আরো বলেন, ‘ইভিএম প্রকল্পের মতো একটি সর্বজন বিতর্কিত উদ্যোগ সংকটকে আরো ঘনীভূত করেছে। এরইমধ্যে ইভিএম’র যান্ত্রিক অকার্যকারিতা যেমন প্রমাণিত হয়েছে তেমনি নির্বাচন কমিশনকে সহযাগী অথবা নিষ্ক্রিয় রেখে কাগজের ব্যালট ছিনতাই বা ডাকাতির মতোই ইভিএম’র উপরেও সরকার দলীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনও সরকারদলীয় বাহিনীরা দখল করেছে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন যার সর্বশেষ প্রমাণ। নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী আবু সুফিয়ান এরইমধ্যেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে প্রচলিত ব্যালট ব্যবস্থায় পুনরায় একটি অবাধ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আপনার বরাবর দাবি করেছেন।’

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের বিশেষজ্ঞরা সাংবাদিকদেরকে ইভিএম মেশিনের কার্যকারিতা প্রমাণে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) দুটি ইউনিট। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। এর মধ্যে ব্যালট ইউনিটটি অরক্ষিত। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারেন। কেননা, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গারের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যালট ইউনিটে তা নেই, সেখানে সাংবাদিকরাই তা প্রমাণ করেন। যা চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনে প্রমাণ হলো। এমনকি তৃতীয় পক্ষ দ্বারা নিরীক্ষিত ইভিএমও যদি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ গ্রহণ করেন সেই যন্ত্র নিয়ন্ত্রণকারীরাই চূড়ান্তভাবে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা পাবেন।’

চিঠিতে আরো ছিল, ‘আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের হাতে এখনও সুযোগ আছে নিরপেক্ষতা প্রমাণের চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে এরইমধ্যেই উন্মোচিত ইভিএম’র অকার্যকারিতাকে বিবেচনায় নিয়ে ইভিএম ব্যবস্থা বাতিল করে প্রচলিত ব্যালট ব্যবস্থাতেই ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। ভোট প্রক্রিয়ায় সরকারি দলের খবরদারি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আশা করি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা প্রমাণে আমাদের উল্লেখিত দাবি পূরণ করে ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ করার ব্যবস্থা নেবেন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন