বিজ্ঞাপন

শাহজালালে তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের দু’টিই বিকল

March 3, 2020 | 2:05 pm

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ ভাইরাস এখন সারাবিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে আক্রান্ত দেশসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ভাইরাসটি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা নিচ্ছে। ঠিক এই সময় বিদেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিনই হাজার হাজার যাত্রী শাহজালাল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কিন্তু বিমানবন্দরটিতে কোভিড-১৯ ভাইরাস শনাক্তের জন্য বসানো তিনটি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে দুটিই বিকল হয়ে গেছে। ফলে একটি স্ক্যানার দিয়ে কোনমতে দায়সারা কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

শাহজালালে তিনটি থার্মাল স্ক্যানার রয়েছে। যার মধ্যে ভিআইপি টার্মিনালে একটি আর বাকি দুটি নরমাল অ্যারাইভ্যালে। কিন্তু ভিআইপি টার্মিনালের থার্মাল স্ক্যানারটি নষ্ট। আর নরমাল অ্যারাইভ্যালে দুটি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে একটি বিকল। কাজ চলছে একটি দিয়ে। তাও আবার দায়সারা গোছের। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাস নিয়ে সতর্ক হওয়ার কিছুদিন পর্যন্ত স্ক্যানারগুলো ভালো ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দুটি স্ক্যানার বিকল হয়ে পড়েছে।

শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র আরও জানিয়েছে, থার্মাল স্ক্যানারগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। স্ক্যানারগুলো প্রতিবছর সিঙ্গাপুর নিয়ে ক্যালিব্রেশন (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করা হয়। কোনো সমস্যা হলে সেগুলো ঠিক করে আবার দেশে এনে চালু করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন থার্মাল স্ক্যানার কেনার উদ্যোগ নেওয়ায় বিকল হওয়াগুলো আর সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়নি। থার্মাল স্ক্যানার কেনার জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ৩টি স্ক্যানারের মধ্যে ২টি নষ্ট। একটি পুরোদমে কাজ করছে। হ্যান্ড থার্মোমিটার দিয়েও কাজ করা হচ্ছে। থার্মাল স্ক্যানার নষ্টের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানেন। শুনেছি টেন্ডারও হয়েছে। এর বেশি জানি না।’

শাহজালালে থার্মাল স্ক্যানারের বিষয়ে আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাহজালালে থার্মাল স্ক্যানারের বিষয়টি সবাই অবগত আছেন। এরই মধ্যে টেন্ডার হয়েছে। এছাড়া আমাদের সার্বিক কাজের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর বিদেশ ফেরত যাত্রীরা নজরদারিতে রয়েছে। খুব দ্রুতই শাহজালালের স্ক্যানার সমস্যার সমাধান করব।’

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিনটি স্ক্যানার আছে জানি। কিন্তু এর মধ্যে কোনটি কাজ করছে আর কোনটি করছে না সেটি জানি না। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করব।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগে চারজন গাড়ি চালক, এমএলএস চারজন, ডাক্তার ১৮জন, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ১৯জন আর ১০জন নার্স কাজ করছেন। প্রতি শিফটে চারজন চিকিৎসক, চারজন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, দুজন নার্স, একজন এমএলএস এবং একজন ড্রাইভার কাজ করছেন। এর মধ্যে ১০জন চিকিৎসকের কাজের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৪ মার্চ। ফলে এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ পর্যন্ত মারা গেছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। চীনের পর কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইরানে। সেখানে সংক্রমণ বাড়ার পর দেশটির প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলো এরই মধ্যে ইরানিদের জন্য তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো ইরানে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।

অন্যদিকে সৌদি আরব ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে মক্কা-মদিনা শহরকে বিদেশি হজ ও ওমরাহযাত্রীদের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে আগেই। সেইসঙ্গে চীন ও ইরান থেকে সবধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে সৌদিআরব। যদিও সৌদি আরব থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সংক্রমণের খবর আসেনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন