বিজ্ঞাপন

৮০ টাকার আদা ৩৬০, ম্যাজিস্ট্রেট দেখে পালালেন ব্যবসায়ীরা

April 26, 2020 | 8:52 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে গত ১০ দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে আদার দাম বেড়েছে চার দফা। ৮০ টাকার আদা প্রতিকেজি দাম গিয়ে ঠেকেছে ৩৬০ টাকায়। আর এর পেছনে চট্টগ্রামভিত্তিক সিন্ডিকেটের কারসাজি পেয়েছে জেলা প্রশাসন, যে সিন্ডিকেটে আছে আমদানিকারক, ব্রোকার, কমিশন এজেন্ট ও আড়তদাররা।

বিজ্ঞাপন

আদাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর খাতুনগঞ্জে অভিযানে যান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম। অভিযানে ৩২ জন আদা আমদানিকারকের মধ্যে পাঁচজনকেও পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ আমদানিকারকই অভিযানের খবর পেয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে গা ঢাকা দেন।

দেখা যায়, সকালে একদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট র‌্যাব সদস্যদের খাতুনগঞ্জে ঢুকছেন। অন্যদিকে হামিদুল্লাহ বাজার, নবী সুপার মার্কেট, আমির মার্কেট, ইয়াকুব বিল্ডিং, চাক্তাই এলাকার আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের শাটার বন্ধ করতে শুরু করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেটকে কয়েকজনকে খুঁজে নিয়ে দোকান ও আড়ত খুলতে বাধ্য করেন।

বিভিন্ন আড়তে আমদানি ও বিক্রির নথিপত্র পর্যালোচনা করে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দেখেন, গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রামভিত্তিক ৩২ আমদানিকারক ৩৫টি চালানে ৩ হাজার ১৪৪ মেট্রিকটন আদা আমদানি করেছেন। কাস্টমসের ছাড়পত্রসহ আমদানি খরচ পড়েছে ২৫ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৫৫ টাকা। এ হিসেবে প্রতিকেজি আদার গড় আমদানি খরচ পড়েছে প্রায় ৮০ টাকা ৩৫ পয়সা। পরিবহন খরচসহ ধরলে প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৯০ টাকা পর্যন্ত দাম নেওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধানে জানতে পেরেছি, গত ১৫ এপ্রিল থেকে চারদফায় আদার দাম বাড়ানো হয়েছে। ১০০ টাকা, ১২৫ টাকা, ২৫০ টাকা থেকে এখন ৩৬০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এটা একটা চক্রের কারসাজি। এই চক্রে আমদানিকারক, ব্রোকার, কমিশন এজেন্ট এবং আড়তদার রয়েছেন। সাধারণত বন্দরে পণ্য আসার পর আমদানিকারকের কাছ থেকে নিয়ে ব্রোকার ও কমিশন এজেন্ট সেটা আড়তদারের কাছে পৌঁছে দেন। বন্দর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্র পার হতে গিয়ে দফায় দফায় দাম বাড়ে পরস্পরের যোগসাজশে। দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা যেসব অজুহাত দেন, সেগুলোর সঙ্গে তাদের নথিপত্রের কোনো মিল নেই।’

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, আদার দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেটে যাদের নাম তাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তারা হলেন, আজিজ, সিরাজ, কাদের ও জিয়াউর রহমান। ২০১৯ সালে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে জিয়াউরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছিল। তিনি পেঁয়াজ-আদার আমদানিকারকও। খাতুনগঞ্জের হাজী সোনা মিয়া মার্কেটে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে পাননি ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযান শুরুর পর অধিকাংশ আমদানিকারই পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।

এদিকে আমদানি মূল্যের চাইতে চারগুণ দামে আদা বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেটের কামাল উদ্দিন ব্রাদার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া নগরীর পাহাড়তলী বাজার ও ফইল্যাতলী বাজারে অভিযান চালান ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদার। অতিরিক্ত দামে আদা বিক্রি করায় তিনি পাহাড়তলী বাজারের এক ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন