বিজ্ঞাপন

ক্ষুদ্ধ স্যামির প্রশ্ন, রঙ ফর্সাকারী ক্রিম কেন ভারতে?

July 1, 2020 | 6:02 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের নির্যাতনে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুতে বিক্ষোভ ফেটে পড়ে বিশ্বজুড়ে। এরপর ড্যারেন স্যামি দাবি করেন আইপিএলে বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর থেকেই বর্ণবাদ দিয়ে সোচ্চার ড্যারেন স্যামি। আর স্যামিকে সমর্থন দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসিও। আবারও বর্ণবাদ নিয়ে সোচ্চার স্যামি, এবার ক্ষুদ্ধ ভারতের রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’ নিয়ে।

বিজ্ঞাপন

৩৬ বছর স্যামি মঙ্গলবার (৩০ জুন) আবারও বর্ণবাদ নিয়ে সোচ্চার হন। এবার স্যামির ক্ষুদ্ধ হওয়ার পেছনে দায়ি অবশ্য ভারতের রঙ ফর্সাকারি ক্রিম ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’। এ ব্যাপারে স্যামি ভারতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমাদের দেশে রঙ ফর্সা করা ক্রিমের নাম “ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি” যদিও তোমাদের দেশে নানান বৈচিত্র্যের রঙের মানুষ বসবাস করে। এই ক্রিমটা বলছে তারাই সুন্দর যারা ফর্সা। এটাই তো বর্ণবাদ।’

হায়দ্রাবাদের টেডেক্সের সঙ্গে আলোচনার সময় স্যামি আরও জানান, ‘এটা অনেক বড় একটি ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরে বিশ্বের মানুষ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে। মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন হয় এবং বর্ণবাদী আচারণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়। এর আগে মানুষ এগুলো নিয়ে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করত। এসব কিছু থেকে আমি শিখেছি একজন মানুষের গায়ের রঙের কারণে অনেক কিছুথেকে বঞ্চিত হয়।’

বিজ্ঞাপন

স্যামি রঙ ফর্সাকারি ক্রিমের বিরুদ্ধে আরও বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে আগেও কথা বলেছি। এই ক্রিমটা মানুষের মধ্যে বর্ণবাদের সঞ্চার করছে। তারা বলছে মানুষ তখনই সুন্দর যখন তারা ফর্সা। তখন আমাকে শুনতে হয়েছে এটাই নাকি সংস্কৃতি। এটা সংস্কৃতি হলেও এটা সঠিক নয়। মানুষকে শিক্ষা নিতে হবে, জানতে হবে কোন শব্দ অন্যকে আক্রমণ করে বা কোন কথায় মানুষ কষ্ট পায়। একজন শিক্ষিত মানুষের উচিৎ সেই সব শব্দ এড়িয়ে চলা।।’

এর আগে স্যামি নিজের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ তোলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক দাবি করেন আইপিএল খেলার সময় ‘কালু’ বলে ডাকা হতো তাকে। কিন্তু তৎকালীন সতীর্থ ইরফান পাঠান, পার্থিব প্যাটেল, ভেনুগোপাল রাওরা বেমালুম অস্বীকার করেন এই দাবি। ক্যারিবিয়ান তারকা এরপর প্রমাণ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।

২০১৪ সালের আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেছেন স্যামি। ওই বছরের ১৪ মে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন ভারতের তারকা পেসার ইশান্ত শর্মা। ছবিতে থাকা ড্যারেন স্যামিকে ‘কালু’ বলে সম্বোধন করেছেন ইশান্ত। ভাইরাল হয়ে পড়া ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে ক্ষমা চাইতে বলেছেন স্যামি।

বিজ্ঞাপন

সেই ছবিতে ইশান্ত, স্যামি ছাড়াও ভারতের অপর তারকা পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা পেসার ডেল স্টেইনও আছেন। ইশান্ত ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘আমি, ভুবি, কালু ও গান রাইজার্স।’

স্যামি বলছেন, ওই সময়টাতে ‘কালু’ শব্দের মানে ঠিকভাবে জানতেন না তিনি। এটাকে প্রসংশাই মনে করতেন। কিন্তু জানার পর বেজাই চটেছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। এখনো ক্ষুব্ধ তিনি।

দুটি বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক বলেন, ‘আমি তাদের বার্তা পাঠাব। তোমরা জানো তোমরা কারা। আমি স্বীকার করছি, যখন ওই নামে আমাকে ডাকা হতো, আমি জানতাম না এর অর্থ কি। দল অন্তঃপ্রাণ একজন হিসেবে আমি ভেবেছিলাম, সতীর্থরা যখন এত খুশি, নিশ্চয়ই এটি মজার কিছু হবে। কিন্তু এটা মোটেও মজার কিছু ছিল না, বিষয়টা বুঝতে পারার পর আমি ভীষণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এটা ছিল অপমানজনক।’

বিজ্ঞাপন

ইশান্তদের ক্ষমা চাওয়ার বার্তা দিয়েছেন স্যামি, ‘যারা আমাকে ওই নামে ডাকতে, তোমরা নিজেরা তা জানো। তোমাদের কয়েকজনের কাছে আমার ফোন নাম্বার আছে, তোমাদের ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে আছি। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করো, চলো বিষয়টা নিয়ে কথা বলি। আমি এখনও ক্ষুব্ধ। তোমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ, তোমাদের সবাইকে আমি ভাইয়ের মতো দেখতাম। তাই, আমার সঙ্গে কথা বলো। যোগাযোগ করো, দয়া করে ব্যাপারটা পরিষ্কার করো।’

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন