বিজ্ঞাপন

হামলার নেতৃত্বে ইউএনও’র বাসার মালি, হাতুড়ি-মই উদ্ধার

September 12, 2020 | 6:37 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

দিনাজপুর: ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনার নেতৃত্বে তারই বাসার মালি ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। ইউএনও’র ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার কথা স্বীকারোক্তিও দিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ইউএনও’র বাসার মালি রবিউল ইসলাম ফরাস।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি এবং মই আসামির স্বীকারোক্তি মতো উদ্ধারও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ৫০ হাজার টাকা খোয়া যাওয়ার ঘটনায় মালি রবিউল ইসলাম ফরাসকে ৪ মাস আগে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে রাখা হয়। সিসিটিভির ফুটেজ এবং সাময়িক বরখাস্ত ঘটনার বিবেচনায় মালি রবিউল ইসলাম ফরাসকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে ঘটনার সবকিছু জানায়।

জানা যায়, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রবিউল ইসলাম ফরাস ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে ২০১৯ সালের শেষে অস্থায়ী মালি হিসেবে নিয়োগ পায়। ৪ মাস আগে মালি রবিউল ইসলাম ফরাস ইউএনও ওয়াহিদার বাসা থেকে একটি লাগেজ ইউএনও কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার সময় সেখান থাকা ৫০ হাজার টাকা খোয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

পরে এ ঘটনাটি ইউএনও ওয়াহিদা জেলা প্রশাসককে জানালে জেলা প্রশাসক মালি রবিউল ইসলাম ফরাসকে সাময়িক বরখাস্ত করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে নিযুক্ত করেন। ফরাসের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বিজোড়া গ্রামে।

এই মামলায় আজ শনিবার বিকেল ৫টায় রবিউল ইসলাম ফরাসকে সিনিয়র জুটশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি’র ওসি ইমাম আবু জাফর। আদালত বিচারক পর্যালোচনা শেষে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

বিজ্ঞাপন

রবিউল ইসলাম ফরাসকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানোর আগে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। প্রেস ব্রিফিংয়ে রংপুর রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য ছাড়াও দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইউএনও ওয়াহিদা খানম হত্যাপ্রচেষ্টা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি ইমাম আবু জাফরসহ অন্য পুলিশ ককর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ইউএনও’র ওপর হামলার মামলার প্রধান আসামি যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা আসাদুল হককে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে আজ শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে নির্দেশ

 

অন্যদিকে, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার প্রত্যাহারকৃত ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলামকে পুলিশ লাইন্সে রাখা হয়েছে। তার স্থলে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রংপুর সদর থানার ইন্সপেক্টর মো. আজিম উদ্দিনকে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিজে সরকারি বাসভবনে দুর্বত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ঘোড়াঘাট থানার ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে ঢাকা আনার পর বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াহিদার শরীরে আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকধীন তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ সুস্থ হলেও তাঁর কোমরের নিচের অংশ এখনও অবশ রয়েছে।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন