বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘আটকে’ থাকা পদোন্নতি জুলাইয়ের মধ্যে

December 8, 2020 | 8:57 pm

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন বছরে প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে প্রায় সব প্রক্রিয়া শেষ করে এনেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আসছে জানুয়ারিতে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব এবং উপসচিব থেকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এছাড়া আগামী জুলাইয়ের মধ্যে যুগ্ম-সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে দুয়েক মাসের মধ্যে যে কয়েকটি সচিব পদ শূন্য হবে, সেসব পদে প্রয়োজন সাপেক্ষে পদোন্নতি দেওয়া হবে। আর যোগ্যতা থাকার পরও যারা এ বছর পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা এবার অগ্রাধিকার পাবেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রটি বলেছে, পদোন্নতি দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে সুপারসিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বেশকয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলতি মাসেও কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে এবং উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এসব পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে।

পদোন্নতির যোগ্যতা রয়েছে, অথচ পাচ্ছেন না— কেন পদোন্নতি পাচ্ছেন না সে প্রশ্ন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সচিবালয়ে কর্মরত অনেক কর্মকর্তার। নাম গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, চাকরি জীবনে কোনোরকম ত্রুটি নেই। সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য যা কিছু দরকার সব রয়েছে। কিন্তু তদবির করে পদোন্নতি চাই না। সরকার আমাদের যোগ্যতা, মেধা এবং কর্মদক্ষতাকে মূল্যায়ন করে পদোন্নতি দিক। এমনকি রাজনৈতিকভাবেও পদোন্নতি চাই না। পদোন্নতির ক্ষেত্রে বঞ্চিতদের দিকে যেন সরকার সুনজর দেয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পরের সরকারগুলো রাষ্ট্রযন্ত্রকে তাদের মতো করে ব্যাবহার করতো। এত করে রাষ্ট্রযন্ত্রে কর্মরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া ক্ষেত্রে সুপারিসিড এবং দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হয়। ওই সময় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বেশি ছিল। সব মিলিয়ে পদোন্নতির ক্ষেত্রে জটিলতাই ছিল বেশি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ওই সময় একজন সিনিয়র সহকারী সচিব ১৭ থেকে ১৮ বছরেরও বেশি সময় চাকরি করে উপসচিব হতে পারতেন না। নিয়ম অনুসারে পদোন্নতি পেয়ে যেসব কর্মকর্তার সচিব কিংবা অতিরিক্ত সচিব হয়ে অবসরে যাওয়ার কথা ওই সময় তাদের অধিকাংশই উপসচিব অথবা কেউ যুগ্ম-সচিব হয়ে অবসরে গেছেন। বর্তমানে এই অবস্থা নেই। প্রতিবছরই কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। পদ খালি হলেই পদোন্নতি দিয়ে সেটি পুরণ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন প্রশাসনে পদ না থাকলেও সুপারনিউমারি ভিত্তিতে কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন। ফলে পদোন্নতি নিয়ে আক্ষেপ কমেছে। ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা অনেক সৌভাগ্যবান। তারা চাকরিতে যোগদান করেছেন ২০০৮ সালের ১২ নভেম্বরে। ১২ বছর চাকরি করেই তারা উপসচিব হচ্ছেন। অথচ ১৯৮২, ’৮৪ ও ’৮৫ ও ’৮৬তম ব্যাচের কর্মকর্তারা ১৭ থেকে ১৮ বছরেরও বেশি সময় চাকরি করার পর উপসচিব হয়েছেন। এখন সিনিয়র সহকারী সচিব পদে যারা ১০ বছর চাকরি করেছেন তারা উপসচিব হচ্ছেন।’

এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘উপসচিব ও যুগ্ম-সচিব পদে অল্পদিনের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এর জন্য এসএসবি বোর্ডের বৈঠক অব্যহত রয়েছে। আর অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি হতে পারে আগামী জুলাই কিংবা আগস্টে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘১০ম ব্যাচের কর্মকর্তাদের সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনবোধ করলে অর্থাৎ চলতি মাসে কিংবা আগামী মাসে এই পদগুলো শুন্য হলে প্রয়োজন সাপেক্ষে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এছাড়া ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। এ জন্য এসএসবি বোর্ডের বৈঠক চলমান রয়েছে।’

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আশা করি, কয়েকদিনের মধ্যেই ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে। আর ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা যারা যুগ্মসচিব পদে আছেন তারাও জানুয়ারিতে পদোন্নতি পাবেন। এছাড়া ১৮তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এখন ১৫ থেকে ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের জুলাই-আগস্টে পদোন্নতি দেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন