বিজ্ঞাপন

‘ইতিহাস বিকৃত করে সরকার নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে’

March 11, 2021 | 10:12 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ‘বিকৃত ও খণ্ডিত’ করে সরকার নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ)  বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাস এরই মধ্যে বিকৃত করা হয়েছে। কোনো একটি দল নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার একমাত্র অভিলাষে মুক্তিযুদ্ধের থেকে শুরু করে স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসকে বিকৃত করে, ইতিহাসকে খণ্ডিত করে আজকের প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে।’

‘সেজন্য আমরা এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাধ্যমে। এই দল মুক্তিযোদ্ধাদের দল,’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই রচনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আজকে যারা বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার্থী আছে, তাদের যে নির্দিষ্ট টেক্সবইয়ের মাধ্যমে সঠিক তথ্য জানানো হচ্ছে না, তাদের প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, সেগুলো যেন তারা উপলব্ধি করতে পারে এবং অবহিত হতে পারে— সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এই রচনা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করেছি।’

মোশাররফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্বাধীনতার পরের ঘটনাবলীকে খণ্ডিত অথবা একটি দলের পক্ষের রচনা হিসেবে শিক্ষার্থীদেরকে শেখানো হচ্ছে। সেজন্যই আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত তথ্যগুলো তুলে ধরতে, নতুন প্রজন্ম সঠিক তথ্য জানুক। মার্চের প্রথম দিন থেকে যেমন ১ মার্চ, ২ মার্চ, ৩ মার্চ, ৭ মার্চ, ৯ মার্চ— প্রতিটি দিনের ঐতিহাসিক ঘটনার সঠিক তথ্য তুলে ধরতে বিএনপি ওইসব দিন পালন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ মার্চ, ২ মার্চ পতাকা উত্তোলন, ৩ মার্চ ইশতেহার পাঠ, ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তৃতা, ৯ মার্চ পল্টন ময়দানে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বক্তৃতা ইত্যাদি নিয়ে যখন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি, আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছি, তখন আপনারা দেখেছেন— আওয়ামী লীগ প্রতিক্রিয়া শুরু করেছে। প্রথমে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও পরে তিনি বলেছেন, বিএনপির এসব কর্মসূচি নাকি ভাওতাবাজি। যখন আমরা প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরছি, তখন একে বিভ্রান্ত করার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীও যে কথা বলেছেন— এটা দুঃখজনক।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। অনুষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।

সম্মেলনে জানানো হয়, রচনা প্রতিযোগিতায় ১০টি স্তরে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রচনা আহ্বান করা হবে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির জন্য ‘শিশুদের জিয়া’; ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির জন্য ‘মুক্তিযুদ্ধ ও শহিদ জিয়া’; একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও জিয়াউর রহমান’; এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’, ‘শহিদ জিয়া: জননন্দিত রাষ্ট্রনায়ক’, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও বিএনপি’, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শহিদ জিয়া’ বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া উন্মুক্ত স্তরের (সব বয়সের জন্য) প্রতিযোগিতার জন্য রচনার বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে— ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’, ‘শহিদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচি ও বর্তমান উপযোগিতা’, ‘বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের সূচনা ও বিকাশ’ এবং ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরে শহিদ জিয়ার অবদান’।

একইভাবে ইংরেজী মাধ্যমের জন্যও স্তরভেদে আলাদাভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগীদের ৩১ মে’র মধ্যে রচনা পাঠাতে হবে। জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক লুতফর রহমান, অধ্যাপক এমদাদ হোসেন, অধ্যাপক শফিকুল হাসান মামুন, হাসান মাহমুদ, শামসুজ্জামান মেহেদি, একরামুল হাসান, মামুনুর রশীদ মামুন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মো. জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন