বিজ্ঞাপন

‘শেখ মুজিব একটি দেশ, একটি জাতিরাষ্ট্রের স্রষ্টা’

March 25, 2021 | 7:38 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই আজ আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নামের সেই মহাপুরুষের জন্ম হয়েছিল বলেই আজ আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। তার জন্ম হয়েছিল বলেই আজ আমরা নিজস্ব দেশ, ভাষা-সংস্কৃতি নিয়ে গর্ববোধ করি। শেখ মুজিব একটি দেশ, একটি জাতিরাষ্ট্রের স্রষ্টা। কাজেই তার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা একযোগে উদযাপন করছি।’

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়েগ ৭টায় মহান স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছর পূর্তি, তথা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- ‘আসুন, ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ে তুলি’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির জনকের ভূমিকা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ২৪ বছরের নিরন্তর রাজনৈতিক সংগ্রামের ফসল। আর এই সংগ্রামের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর এই সংগ্রাম ভাষার অধিকারের দাবিতেই শুরু হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনে যে স্বাধিকারের বীজ বপন করেছিলেন, তাকেই সযত্নে লালন-পালন করে তিনি স্বাধীন মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পরিণত মহিরূহে রূপান্তরিত করেন। শেখ মুজিব থেকে পরিণত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবে।

তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আটান্নর আইয়ুব খানবিরোধী আন্দোলন, ছেষট্টির ঐতিহাসিক ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পাই স্বাধীনতা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপন যেন আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব না হয়’

জাতির জনকের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু একটি স্বাধীন-সার্বভৈৗম ভূখণ্ডেরই স্বপ্ন দেখেননি, তিনি স্বপ্ন দেখতেন এ জনপদের সাধারণ মানুষ— যারা শত শত বছর ধরে শোষণ-বঞ্চণা, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, না খেয়ে রোগে-শোকে মারা গেছে— তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে। তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসার ব্যবস্থা করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন।

‘আমাদের দুর্ভাগ্য, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী কুচক্রী মহল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে যেমন স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া হয়,’— বলেন শেখ হাসিনা।

১৯৭২ সালে ২৮ জুন সিলেটে এক সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেওয়া বক্তব্যও ভাষণে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু ওই বক্তব্যে বলেন, “… প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী হবার জন্য আমি রাজনীতি করি নাই। আমি রাজনীতি করেছিলাম সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুক্তির জন্য। এখন আমার রাজনীতির মুক্তি হয়েছে। আমার অর্থনীতির মুক্তি প্রয়োজন। এইটা না হলে স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে। যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়, যদি বাংলার মানুষ সুখে বাস না করে, বাংলার মানুষ যদি অত্যাচার, অবিচারের হাত থেকে বাঁচতে না পারে তো এই স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, শেখ মুজিব শুধু স্বপ্ন দেখতেন না, কী করে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হয়— তাও তিনি জানতেন। স্বাধীনতার পর একেবারে শূন্য হাতে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ধ্বংস-প্রাপ্ত রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, রেললাইন, পোর্ট সচল করে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেন। ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি ও ২৭টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশের কাতারভুক্ত করেন।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশকে লক্ষ্যচ্যুত করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী অগণতান্ত্রিক শাসকেরা বাংলাদেশকে আদর্শচ্যুত করেছে। দীর্ঘ ২১ বছর এ দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করে তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে বহির্বিশ্বে পরিচিত করেছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান দলটির সভাপতি সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে জাতীয় জীবনের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক উদযাপনের সময় স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছেন।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন