বিজ্ঞাপন

সাকিব-রশিদদের ভালোবাসায় আপ্লুত শারীরিক প্রতিবন্ধী ভক্ত

March 5, 2022 | 10:40 pm

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট

মিরপুর স্টেডিয়ামে হঠাৎ-ই যেন ছোটখাটো এক ‘তারকা’ বনে গেলেন আল-আমিন নামের শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ১৬ বছর বয়সী এক বালক! আল-আমিনকে নিয়ে টিভি সাংবাদিকদের ব্যস্ততা বেড়ে যেতে দেখা গেল রোল, ক্যামেরা, একশনে…। ১৬ বছর বয়সী ওই বালককে ক্যামেরার সামনে পেতে কয়েকজন মোজো সাংবাদিকদের তখন অপেক্ষা। হঠাৎ এই বালককে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হওয়ার কারণ সাকিব আল হাসান, রশিদ খান, নুরুল হাসান সোহানরা।

বিজ্ঞাপন

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাকিব, রশিদরা ভালোবাসায় মুগ্ধ করেছেন প্রতিবন্ধী এই বালককে। ব্যতিক্রমী সেই মহানুভবতা নজর এড়ালো না কারোরই। তাকে ক্যামেরার সামনে দাঁড় করানোর আগ্রহ সেই কারণেই।

রোববার (৫ মার্চ) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটে হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। যাতে দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়। এর আগে ওয়ানডে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর দুই সিরিজের পুরস্কার বিতরণী হলো এক সঙ্গে। যাতে অনেকটা সময়ই লেগেছে। আল-আমিনকে নিয়ে ঘটনা এই সময়ের মধ্যেই।

নারায়নগঞ্জের হাড়াইহাজারের সাতগ্রামের বাসিন্দা আল-আমিন জন্ম থেকেই শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ডান হাতটি কাজ করে না বললেই চলে। তবে ক্রিকেটে তার বড্ড শখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে জানালেন, স্বপ্ন দেখেন একদিন তিনি স্পিন বোলিং করবেন আর দর্শকরা করোতালি দিবে। যেমনটি সাকিব আল হাসান, রশিদ খানদের বোলিংয়ের সময় হয়। ক্রিকেটের প্রতি তীব্র ভালোবাসার কারণেই নারায়নগঞ্জের স্থানীয় এক ক্লাবে নিয়মিত ক্রিকেট দীক্ষা নেন। বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের খেলা দেখতে ছুটে এসেছেন সেই নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে।

প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকার থেকে প্রাপ্ত প্রত্যায়ন পত্র দেখিয়ে আজ গ্যালারীতে ঢোকেন। গ্যালারী থেকেই পুরস্কার বিতরণীর সময়ে অনুরোধ করে ঢুকে পড়েন মাঠে। স্বপ্নের সাকিব-রশিদরা তখন আল-আমিনের বাস্তবে, একদম সামনেই।

বিজ্ঞাপন

অনুমতি নিয়ে প্রথমে ছুটে যান সাকিব আল হাসানের কাছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয়ের সহজেই নজর কেড়েছে এই ভক্ত। কাছে ডেকে কথা বলেছেন, ছবি তুলেছেন। এ সময় দলের অন্য ক্রিকেটারদেরও দেখা গেল আল-আমিনের কাছে এগিয়ে এসে কথা বলতে।

খানিক বাদি আফগানিস্তানের তারকা স্পিনার রশিদ খানকে সামনে পেয়ে আল-আমিন যেন আত্মহারা! রশিদের কাছে বল চেয়ে বসলেন। কিছুক্ষণ কথা হলো আল-আমিন আর রশিদের। সাংবাদিকরা এ সময় দোভাষীর ভুমিকা পালন করলেন। কথা বলা, ছবি তোলা শেষে আফগানিস্তানের ড্রেসিংরুমে আল-আমিনকে ডেকে নিলেন রশিদ। নিজের স্বাক্ষর করা ক্রিকেট বল উপহার দিয়েছেন আল-আমিনকে।

আফগান ড্রেসিরুমের অভিজ্ঞতা জানাতে আল-আমিন বলছিলেন, ‘খেলোয়াড়দের অনেকেই আমার কাছে এসে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করছিল। ইংরেজি, হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল বলে আমি কিছুই বুঝিনি। আরবি ভাষাও বলছিল। পরে রশিদ খান বল দিয়েছে আমাকে। আমি খুবই খুশি।’

বিজ্ঞাপন

কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহানকে সামনে পেয়ে ছবি তোলার আবদার জানালেন আল-আমিন। সোহান এগিয়ে এসে ছবি তুলেছেন, খোঁজ নিয়েছেন। আল-আমিন বলছিলেন, ‘আজকের দিনটি ভুলব না কোন দিনই। জীবনের সেরা দিন এটি।’

শেষ সময়ে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী দলের হয়ে খেলার আগ্রহের কথা জানিয়ে গেলেন আল-আমিন। প্রতিবন্ধী ক্রিকেটের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে সারাবাংলাকে আল-আমিন বলেন, ‘আমিও জানি প্রতিবন্ধী দল (জাতীয়) আছে। আমি সেখানে খেলতে চাই। প্রতিবন্ধী ক্রিকেট খেলতে চাই। কিন্তু আমি খেলার জন্য কোনো মাধ্যমই খুঁজে পাচ্ছি না। কাকে বলব, কিভাবে খেলব কিছুই জানি না।’

সারাবাংলা/এসএইচএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন