May 18, 2022 | 10:01 am
গোপাল মোহন্ত, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
গাইবান্ধা: জেলার গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া, কাটাখাঁলী ও বাঙ্গালী নদীর দুই পাশের ভেঙে যাওয়া ৩৫ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন অংশ মেরামত না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের লোকজন। সামনে বন্যা হলে চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন নির্মিত এ বাঁধ সংস্কার না হলে বন্যার পানিতে বসতবাড়ি, ফসলসহ আবাদি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাবে। তবে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করতোয়া, বাঙ্গালী, কাটাখালী নদীর বগুলাগাড়ী থেকে চর নামাপাড়া ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ২১৫০ মিটার ক্ষতিগ্রস্থ, বিষপুকুর থেকে নয়াপাড়া বালুয়া পর্যন্ত ৯ কিলোমিটারের মধ্যে ৪৫০ মিটার, কাটাখালী সোহাগী থেকে মালাধর ফতেল্লাপুর ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ২ কিলোমিটার, বালুয়া বাবুর বাজার থেকে দেওয়ানতলা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ৮৫০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
নদীতে পানি বাড়লেই প্রতি বছর সাহেবগঞ্জ, মেরী, সাতানাবালুয়া, গোসাইপুর, চানপুর খলসী, সমছপাড়া, পুতাইর বোচাদহ, সোনাইডাঙ্গা, রঘুনাথপুর, বগুলাগাড়ী, বামন হাজরা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়ে বিভিন্ন ফসল।
২০১৮ সালে বন্যায় বগুলাগাড়ী থেকে বড়দহ ঘাট এবং ফুলহার থেকে ত্রিমোহীনি পর্যন্ত বাঁধের বিভিন্ন স্থান বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে যায়। বিভিন্ন সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তা পরিদর্শন করলেও ভেঙে যাওয়া অংশগুলো সংস্কার করা হয়নি। যে কারণে প্রতিবছর এসব এলাকার মানুষজনকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধের তরফমনু ও খলসী চাঁদপুর পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি ঢুকে প্রতিবছর গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর ভায়া ঘোড়াঘাট মহাসড়ক ও পৌর এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয়রা বারবার দাবি জানালেও বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের তরফকামাল গ্রামের আব্দুল ওহেদ জানান, ২০১৮ সালে করতোয়া বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধ ভেঙে যায়। এ কারণে সে সময় গ্রামের অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়, ভেসে যায় ঘরের অনেক আসবাবপত্র। এখন বন্যা হলেই প্রতি বছর বাড়ি ডুবে যায়। বাঁধ মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফ হোসেন বলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধ রয়েছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে অবহিত করেছি।
সারাবাংলা/এসএসএ