বিজ্ঞাপন

‘প্রধানমন্ত্রীর কূটনীতিতে টানেল নির্মাণে রাজি হয় চীন’

November 26, 2022 | 4:47 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনকনভেনশনাল ডিপ্লোমেসির কারণে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণে রাজি হয় চীন সরকার। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকালে আমরা যখন চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসলাম তখন তারা রাজি হননি। কিন্তু পরে রাতে খাবার টেবিলে প্রধানমন্ত্রীর ডিপ্লোম্যাটিক দক্ষতায় চীন সরকারকে রাজি করাতে সক্ষম হন। পরে লেট নাইট ডিনার আয়োজনের মাধ্যমে টানেলের চুক্তি স্বাক্ষর হয়।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে’র দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি ঘোষণার অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। প্রথম টানেলের কাজের এই সমাপ্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। গণভবন প্রান্ত থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে গণভবন প্রান্তে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। টানেল প্রান্ত থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস আর টানেল প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান। চট্টগ্রামের টানেল প্রান্তের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় রাজনৈতিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, ‘প্রথমদিকে চীন সরকার টানেল নির্মাণে সহায়তা করতে রাজি হয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনকনভেনশনাল ডিপ্লোমেসির কারণে চীন সরকার রাজি হয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চীন সফরকালে আমরা যখন চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসলাম তখন তারা রাজি হননি। কিন্তু পরে রাতে খাবার টেবিলে ডিপ্লোম্যাটিক দক্ষতায় চীন সরকারকে রাজি করাতে সক্ষম হন প্রধানমন্ত্রী। পরে লেট নাইট ডিনার আয়োজনের মাধ্যমে টানেলের চুক্তি স্বাক্ষর হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘টানেল বাস্তবায়ন করতে প্রধানমন্ত্রী ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছিলেন আমাদের। এত বড় প্রকল্প খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হয়েছে। টানেলের বিষয়ে সিদ্ধান্তগুলোও তাড়াতাড়ি নেওয়া হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে শেষ করতে পেরেছি। কোনো অভিযোগ আসেনি।’

বিজ্ঞাপন

টানেল নিমার্ণে চীনের সঙ্গে চুক্তির করার বিষয়েও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম- কাজগপত্র যেন সব প্রস্তুত থাকে। আমরা চীনে যাচ্ছি। চীনের সঙ্গে আলাপ করব। তারা যেন আমাদের টানেল তৈরি করে দিতে সহযোগিতা করে। কিন্তু প্রথম দিকে তারা (চীন) এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে চায়নি। একটু সমস্যা ছিল। আমাদের জন্য ডিনারের ব্যবস্থা করা হয়, সেই ডিনারে বসে আমি আস্তে আস্তে কথার প্রসঙ্গে চীনের প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রস্তাবটি দেই, খেতে খেতে এই প্রস্তাবটা আসে। তখন তিনি রাজি হয়ে যান। আর পরের দিনেই আমাদের যাত্রা শেষ হওয়ার কথা। তাই রাজি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বললাম যে, আমাদের সবাই কিন্তু প্রস্তুত আছে। আপনাদের অফিসাররা যদি প্রস্তুত থাকে। তাহলে এখনেই বসেই আলোচনা করতে পারি এবং পেপার তৈরি করতে পারি। আজকেই এটা সই করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কেবিনেট সেক্রেটারি তখন সেতু সচিব ছিলেন। সেখানে সেতু বিভাগের কর্মরতরাও ছিলেন। তারা কিন্তু খাবার শেষ করেনি। কেবল আমাদের খাবার শুরু। খাবার বাদ দিয়ে তারা সঙ্গে সঙ্গে উঠে যান। আর চীনের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাদের অফিসারও চলে যায়। আমি অপেক্ষা করি। রাত ১২টার দিকে যে স্যুটে আমি ছিলাম, সেই বসার ঘরে আমার উপস্থিতিতে এটা সই করা হয়।’

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামেও মেট্রোরেলের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেনের পাশাপাশি আরও দুটি সার্ভিস লেন করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এ কাজে চীনের সহায়তা পাব। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে গড়ে তুলতে বিশেষ পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য অঞ্চলেও পরিবর্তন হয়েছে। সর্বোপরি বাংলাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। এখন আমাদের লক্ষ্য আগামী ২০৪১ সালে দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বানানো।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে আর কোনো উন্নয়ন বাকি নেই। চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রী মায়াবী টান আছে। এখানে অনেক পুরোনো নেতা রয়েছেন। এখন অনেকে বেঁচে নেই। স্থানীয় অনেক নেতার টানেল নির্মাণের দাবি ছিল।’

সারাবাংলা/এনআর/এনএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন