বিজ্ঞাপন

‘পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় না’

April 27, 2023 | 11:32 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

টোকিও: বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অনেকে বলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় না। বিএনপি কোন মুখ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ২৯টি আসন পেয়েছিল। তারা ২০টি দল, কিন্তু আসন পেয়েছিল মাত্র ২৯টি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাপানের দ্য ওয়েস্টিন টোকিওর গ্যালাক্সি বলরুমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চক্র কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে? তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং জনগণের কোনো উন্নয়ন চায় না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে, তারা নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কা করে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত চক্র ৭০টি সরকারি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে ৫০০ জনকে হত্যা ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করেছিল। মানুষের যদি মানবিক গুণ থাকে, তাহলে তারা কখনোই মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে না। যারা এমন নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা কোন মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চক্র নানাভাবে নির্বাচন নিয়ে কারসাজি শুরু করেছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা আওয়ামী লীগ শাসনামলে সব উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে দীর্ঘতম মেয়াদ পার করে বাংলাদেশে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন কোনো রাষ্ট্রপতি নেই যিনি এত বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন এবং স্বাভাবিকভাবে বিদায় নিয়েছেন। জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল এবং অন্য রাষ্ট্রপতিরা অস্বাভাবিক উপায়ে তাদের রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়েছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরেও মামলা করতে পারেনি। কারণ, খুনিরা ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন করে তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘হত্যাকারীরা শাস্তির বদলে উপহার পেয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবস্থান করছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দুই দেশের সরকারের কাছে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা অনুরোধে কর্ণপাত করে না।’ যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘খুনিদের (বঙ্গবন্ধুর) নিজ দেশে আশ্রয় দিয়ে তারা বাংলাদেশে মানবতা খোঁজে।’

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সমাজ ও দেশ যাতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত থাকে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বানও জানান।

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বিশ্বে মানুষের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীকে যাতে অন্তত খাবারের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সে লক্ষ্যে তার সরকার সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি সকলকে প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের খাদ্যের জন্য কোনো দেশের ওপর নির্ভর করতে না হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে কেউ যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে তা নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদচিহ্ন অনুসরণ করে প্রতিটি মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৪ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নতির দিক থেকে বাংলাদেশ পুরোপুরি বদলে গেছে।’ প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

মঞ্চে এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

সারাবাংলা/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন