বিজ্ঞাপন

জাবি ছাত্রলীগের ২ নেতার অনশনে শিক্ষকদের সংহতি

February 17, 2024 | 7:17 pm

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে অন্য গ্রাফিতি অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করছেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। তাদের অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক ছাত্রলীগ নেতা অনশন শুরু করেন। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় একই দাবিতে আরেক ছাত্রলীগ নেতা অনশনে যোগ দেন।

অনশনরত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম এবং বাংলা বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

তাদের দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং আট দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

অনশনের বিষয়ে এনামুল হক এনাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ফেলার পর দশদিন পার হয়েছে, তবে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। অনেক চাপাচাপির পর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যেখানে ব্যঙ্গচিত্র আঁকার পর একটি সংগঠন অহংকারবোধ থেকে বিবৃতি দিয়েছে, আবার তাদের অফিসিয়াল পেইজ থেকে প্রচারও করেছে। তাহলে তদন্ত কমিটি কিসের জন্য! অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার জন্য নাটক করা হচ্ছে।’

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছবি আঁকার জন্য অনেক জায়গা আছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি কেন টার্গেট করা হলো? নতুন ব্যঙ্গচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, এটা যৌক্তিক কোন চিত্র নয়। যারাই এটা করেছে, তারা অন্য এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।’

সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ এর আহ্বায়ক ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘অনশনকারী ছাত্রলীগ নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে, তাদের কর্মসূচির সাথে সংহতি জানাতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে ব্যঙ্গচিত্র অঙ্গনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো গোষ্ঠীর ইন্ধন আছে কিনা- সেটাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী এবং সদস্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও অধ্যাপক আইরিন আক্তার প্রমুখ।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি প্রতিকৃতি আঁকা ছিলো। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রাফিতিটি মুছে দেওয়া হয়। এখন সেখানে আবারো বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতি আঁকা হচ্ছে।

এ ঘটনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শামীম আহমেদ ও চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজউদ্দীন। এছাড়া কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন-২) এ বি এম আজিজুর রহমানকে সদস্য-সচিব করা হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘এ ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। এতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন