August 8, 2018 | 5:50 pm
রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
না, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। চলচ্চিত্র তো সময় সাপেক্ষ, তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগে। ভক্তদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হলে সিনেমার পাশাপাশি নাটকও করতে হয়। ভক্তদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে নাটকে অভিনয় করা। তাছাড়া ঈদ উপলক্ষে ভালো ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হয়। তাই ভালো গল্পের নাটকের প্রস্তাব পেলে ফেলতে পারিনা।
আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা এখন তেমন একটা ভালো না। বলা যায় লাইফ সাপোর্টে রয়েছে চলচ্চিত্র শিল্প। ছবি নির্মাণের সংখ্যা কমে গেছে। এরমধ্যেও বেশকিছু ছবিতে দর্শক আমাকে দেখতে পাবে। সেসব ছবির মধ্যে শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত ‘পাপকাহিনী, মোহাম্মদ আসলামের ‘আমার সিদ্ধান্ত’ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে ‘বেলা অবেলা’চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি। প্রতিটি ছবিতে দর্শক আমাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দেখতে পাবে।
আরও পড়ুন : প্রতারক সজল!
এখন একজন ছাড়া বাকি নায়করা কেউ ছবি করছেন না। আমাদের ছবির পরিবেশ ভালো নেই। একজন ছাড়া অন্যদের ছবি চলছে না। শুধু আমি না, অনেক সম্ভাবনাময় নায়ক-নায়িকা ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন। চলচ্চিত্রে এমন অবস্থার কারণে তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না। যখন চলচ্চিত্রের পরিবেশ অনুকূলে আসবে তখন সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবেন। আমার কথা যদি বলি, সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি কিনা? যদি পরিবেশ ভালো হয় তাহলে বলতে পারব। এখন এটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো।
বিজ্ঞাপন
আমি বলব প্রযোজক সংকট। সেই সঙ্গে সিনেমা হল সংকট। বলতে গেলে আমি নিজেই নতুন। আমি খুব বেশি ছবি করিনি। আমার পরের প্রজন্মের অবস্থাও এক। এখন নতুন মুখের সন্ধান করা হচ্ছে। ওরা কি করবে এখানে এসে? ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ হতাশ করবে তরুণদের। বাছাই করে ওদের এনে হতাশ করার কোন মানে হয়না। যারা সিনিয়র তাদের নিয়ে যেখানে ছবি নির্মাণ করা হচ্ছেনা। নতুনদের নিয়ে কি সিনেমা নির্মাণ করবে সেটা বোধগম্য নয়। একবুক স্বপ্ন নিয়ে যারা আসবে, তাদের নিয়ে যদি ছবি বানানো না হয় তাহলে তাদের স্বপ্ন ভেঙে যাবে। আমার মনে হয় এসব না করে প্রেক্ষাগৃহ বাড়ানো, ভালো প্রযোজক আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা উচিত। নতুন মুখ খোঁজায় আমার কোন বিরোধীতা নেই। আমি মনে করি পর্যাপ্ত পরিমাণে শিল্পী আমাদের আছে। তবে শিল্প সংকট রয়েছে।
কলকাতায় এটা আমার প্রথম কাজ। আমার সহশিল্পী সায়নী ঘোষ। এতে আমি একজন স্ট্রাগলিং পরিচালকের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। ছবির নেশা আমাকে পেয়ে বসে। চলচ্চিত্র নির্মাণের পুরো জার্নিটা ছবিতে দেখানো হয়েছে। কাজটি করে অনেক ভালো লেগেছে। বাংলাদেশী অভিনেতা হিসেবে ইউনিটের সবাই আমাকে সমীহ করেছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : জোলিকে কড়া জবাব দিলেন পিট
বিশ্বব্যাপী ওয়েব ফিল্মের বড় বাজার তৈরি হচ্ছে। এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। বলিউডের সাইফ আলি খান, নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীসহ অনেকে ওয়েব মাধ্যমে কাজ করছেন। কলকাতায়ও প্রচুর ওয়েব সিরিজ হচ্ছে। বাংলাদেশেও ঢুকে গেছে। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কিংবা ওয়েব- যেখানেই অভিনয় করিনা কেনো, ভালো কাজ করতে চাই আমি।
আমি পলিটিক্সের শিকার হয়েছি। কিন্তু এই অভিজ্ঞতার কথা বলতে চাইনা। এখন এটি নিয়ে বলার কিছু নেই। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই আমার মতো পলিটিক্সের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সবার আগে পলিটিক্স দূর করতে হবে। এখানে যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে। পলিটিক্স করার তো মানে হয়না।
আমি এ পর্যন্ত যতোগুলো ছবিতে অভিনয় করেছি সবগুলো করে আমার ভালো লেগেছে। ইন্ডাস্ট্রি ভালো হলে আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারব। তবে সবমিলিয়ে আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে খুব বেশি সন্তুষ্ট না। আমি আরও ভালো ছবির অপেক্ষায় আছি।
বিজ্ঞাপন
আমি চলচ্চিত্রের জন্য অনেক ছাড় দিয়েছি জীবনে। চলচ্চিত্রের জন্য আমি সাত-আট বছর নাটকে অভিনয় করিনি, বিজ্ঞাপন করিনি। সেসব নাটক-বিজ্ঞাপনে কাজ করলে আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হতাম। চলচ্চিত্রের প্রতি আমি ভীষণ দুর্বল। জানিনা কেউ আমার এই বিষয়টা জানে কিনা!
আরও পড়ুন : ঈদে ফেসবুক ছাড়ার উপায় জানাবেন আরিয়ান
নিজেকে নিজে মার্কিং করার আমি কেউ না। আমার অভিনয় আমি দেখি না। আমার দর্শক দেখে। দর্শক যদি শূণ্য দেয়, মেনে নেবো। আবার দশে দশ দিলেও মেনে নেবো। সবকিছু নির্ভর করছে তাদের ওপর।
ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত
সারাবাংলা/আরএসও/পিএ/পিএম