বিজ্ঞাপন

ব্রেক্সিট: মে’র পরাজয়ে ইউরোপীয় গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া

January 16, 2019 | 11:59 pm

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ কমন্সে ব্রেক্সিট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটে ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন যুক্তরাজ্যর প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মঙ্গলবারের (১৫ জানুয়ারি) ভোটে তার পরাজয় অনুমেয় থাকলেও, পরাজয়ের ব্যবধান অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। যুক্তরাজ্যসহ পুরো বিশ্বই মে’র পরাজয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। বাদ যায়নি ইউরোপও।

ইউরোপের পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো মে’র পরাজয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। তবে ইউরোপের অনেক গণমাধ্যমই প্রত্যাশা করছে যে, এমনটা হবে না। ব্রেক্সিট কার্যকর হতে বিলম্ব হবে। তবে বেশিরভাগ পত্রিকাই ব্রেক্সিটের ভাগ্য নিয়ে কোন ভবিষ্যদ্বাণী করেনি।

নতুন অগ্রগতি

ফরাসি মধ্য-বামপন্থি পত্রিকা লে মন্দে মে’র পরাজয় নিয়ে লিখেছে, এটি সবচেয়ে সতর্কতামূলক অনুমানের চেয়ে বেশি পীড়াদায়ক। এছাড়া পত্রিকাটি মে’র রাজনৈতিক ক্যারিয়ার টিকে থাকা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ব্রেক্সিট খসড়া বাতিল: কী করবেন থেরেসা মে?

লে মন্দে লিখেছে, এতে নতুন যাত্রার শুরু হল। এখন ব্রিটিশ রাজনীতির দৃশ্যপট ও ব্রেক্সিটে সবই সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

মধ্য-বামপন্থি লে ফিগারো পত্রিকা জানিয়েছে, ব্রিটিশ গণতান্ত্রিক পার্লামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরাজয় ছিল এটি। এতে করে দেশটি আরও গভীর বিশৃঙ্খলার দিকে মোড় নিল। সাদৃশ্যমূলক কথা লিখেছে, বামপন্থি দৈনিক লিবারেশন’ও।

বিরোধীদলীয় লেবার নেতা জেরেমি করবিনের দিকে মনোযোগ টেনে ফিগারো বলেছে, এই মুহূর্তে তার জন্য সবচেয়ে ভাল হবে দ্বিতীয় কোন ব্রেক্সিট গণভোট ঠেকাতে থেরেসা মে’র সঙ্গে আলোচনা করে কোন সিদ্ধান্তে সম্মত হওয়া।

পত্রিকাটি লিখেছে, এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু সংকটের মুহূর্তে সবই সম্ভব।

দৈনিক লিবারেশন বলেছে, মে’র এমন নজিরবিহীন পরাজয়ের পর স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তার তাৎক্ষণিক পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু আড়াই বছর আগে করা ব্রেক্সিট চুক্তি বর্তমানে কোন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেই।

বিজ্ঞাপন

কুয়ো ভাদিস?

মঙ্গলবারের ব্রিটিশ ব্রেক্সিট ভোট নিয়ে জার্মান গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠেছে ‘বিশৃঙ্খলা’ ও ‘হাঙ্গামা’ শব্দ দু’টি।

মিউনিকের মধ্যপন্থি সুয়েদডয়েচে জেইতুং লিখেছে, ব্রিটেন বর্তমানে শাসনের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

পত্রিকাটি লিখেছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মে তার নির্মম পরাজয় নির্বিকার ভঙ্গিতে সামলাচ্ছে। কিন্তু ব্রেক্সিট নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সুয়েদডয়েচে জেইতুং।

আরও পড়ুন- থেরেসা মে’র সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট চেয়েছে বিরোধী দল

মধ্য-ডানপন্থি ফ্র্যাংকফুর্তের আলজেমেইনে জেইতুংও একইরকম মন্তব্যে লিখেছে, তারাও দেখতে চায় ব্রেক্সিট নিয়ে কি হতে চলেছে।

মধ্য-ডানপন্থি ডিয়ে ওয়েল্ট, ডাউনিং স্ট্রিট থেকে ব্রেক্সিট বিষয়ে কোন স্থিতিশীল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে লিখেছে, ‘কুয়ো ভাদিস ব্রিটানিয়া?’ (ব্রেক্সিট তুমি কোথায় যাচ্ছ) প্রশ্নের উত্তরে মে সম্ভবত ব্রাসেলসের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপের আশা করছে।

যেমন কর্ম তেমন ফল

অপ্রত্যাশিত পরাজয়ে মে’র প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে কয়েকটি পত্রিকা। পরাজয়ের পর তার নিশ্চল প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করে ভিয়েনার মধ্য-ডানপন্থি ডিয়ে প্রেস বলেছে, কেউ তাকে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ের রক্ষার্থে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার জন্য দোষ দিতে পারে না।

আরও পড়ুন- ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নাকচ হলো থেরেসার ব্রেক্সিট খসড়া চুক্তি

কিন্তু কোন কোন মন্তব্যকারী পত্রিকা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে কোনরকম ছাড় দেয়নি। স্পেনের এল পিরিয়ডিকোতে বেগোনা আর্স বলেন, থেরেসা মে অসম্ভব একটি কাজ অর্জন করেছেন। তিনি কনজারভেটিভদের সঙ্গে বিরোধীদলকে ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় একজোট করতে পেরেছেন। দুই বছরের আলোচনা শেষে এটি একটি দানবীয় ব্যর্থতা।

এদিকে অস্ট্রিয়ার দের স্ট্যান্ডার্ড’এ সেবাস্টিয়ান বর্গার বলেছেন, এই পরাজয় মে’র প্রাপ্য ছিল। তিনি দেশের আগে নিজ দলের স্বার্থের জন্য কাজ করেছেন।

সারাবাংলা/আরএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন