বিজ্ঞাপন

সড়কের ভূমি বেহাত, মন্ত্রণালয়ের টেবিলে লালফিতায় ফাইল

February 24, 2019 | 7:18 am

।। সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ভূমি ইজারা নীতিমালা না থাকায় সারাদেশে সড়কের পাশের কয়েক হাজার একর জমি থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এমনকি সড়ক সংলগ্ন সরকারের এসব জমি বেহাত হতে চলেছে। বহু জমি দখলে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা।

সাতশটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং প্রায় ১১ শ পেট্রোল পাম্প তিন বছর থেকে কোনো ইজারা ছাড়াই দখল করে রেখেছে সড়কের জমি।

অভিযোগ আছে, দুই বছর আগে সড়কের ভূমি ইজারা নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করেনি সড়ক পবিরহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা।

বিজ্ঞাপন

কাজটি এগিয়ে নিতে সেতুমন্ত্রী কয়েকবার তাগিদ দিলেও তাতে কাজ হয়নি। ফলে ওইসব জমি ফিলিংস্টেশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে চলে গেছে। ফলে রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।

এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মনিন্দ্র কিশোর সারাবাংলাকে জানান, ‘কাল (মঙ্গলবার) এ নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। এরপর আরও একটি বৈঠক হয়তো করতে হবে। এরপরই এটি নীতিমালা আকার পাবে। প্রায় এক মাসের মধ্যে তারা নীতিমালাটি তৈরির সব কাজ করতে পারবেন। বাকিটা মন্ত্রণালয় সচিব বা মন্ত্রীদের সিদ্বান্ত।’

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা সড়কের ভূমি ইজারা নীতিমালা নিয়ে বেশ অনাগ্রহী। দুই বছর আগেই নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হলেও তাদের কোনো তাগিদ তাতে নেই।

বিজ্ঞাপন

সিএনজি স্টেশন মালিকদের অভিযোগ, মূলত কমিশন (পার্সেন্টেজ) না পাওয়ায় কাজ করছেন না তারা। অথচ ঠিকাদারী কাজ হলে ঠিকই তারা দ্রুত ফাইল ছাড়তেন।

এ বিষয়ে সিএনজি স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গত ৩ বছর ধরে সরকারকে কোনো রাজস্ব দিচ্ছি না। মূলত নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া শুরুর আগ থেকে রাজস্ব দেওয়া বন্ধ আছে। আমরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। কারণ নীতিমালানা থাকায় আমরা জানি না—কীভাবে এবং কত টাকা সরকারকে রাজস্ব দিতে হবে।’

অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘ভূমি ইজারা নীতিমালার কাজ কোনভাবেই আগাচ্ছে না। নীতিমালাটি এখন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত সচিবদের টেবিলে আটকা আছে। এখন সরকার যদি আমাদের কাছ থেকে টাকা না নেয় তাহলে আমরা জোর করে দিতে যাবো কেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্ত্রণালয়ে আমার সামনে সচিবদের নীতিমালার কাজ এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। তারপরও কাজ হয়নি। সচিব এ বিষয়ে এখনো কোনো বৈঠক ডাকেননি। ফলে নীতিমালার কাজও আর এগোয়নি।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, সারাদেশে সড়কের পাশে সরকারি জমিতে সাতশটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং প্রায় এগারশ পেট্রোল পাম্প গড়ে উঠেছে। কিন্তু নীতিমালা নাথাকায় ওইসব প্রতিষ্ঠান রাজস্ব দিচ্ছে না।

এদিকে, ওই নীতিমালার কারণে আটকে আছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সড়ক সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও।

সেতু মন্ত্রণালয়ের আরেক যুগ্ম সচিব রওশন আরা জানান, বছর দুয়েক আগে তিনি যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন এই ভূমি ব্যবস্থাপনা আপডেট কারার কাজ শুরু হয়। কিন্তু এটা অনেক ধীর গতিতে আগাচ্ছিল।

সারাবাংলা/এসএ/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন