বিজ্ঞাপন

বয়ঃসন্ধিকালে প্রয়োজন তথ্য, বন্ধুর মতো পরামর্শ ও সেবা

June 23, 2019 | 5:28 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক নানান সংকটের মুখোমুখি হতে হয় কিশোর-কিশোরীদের। এ সময় শরীরের সঠিক গঠন প্রক্রিয়া ও সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের জোগান প্রয়োজন। পাশাপাশি মানসিক মানসিক সংকটগুলো মোকাবিলার জন্য দরকার প্রয়োজনীয় তথ্য এবং বন্ধুর মতো কারও পরামর্শ, সাহচার্য ও উপযুক্ত সেবা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৩ জুন) রাজধানীর সিরডাপে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইউবিআর (ইউনাইট ফর বডি রাইটস) আয়োজিত ‘শেয়ারিং লার্নিং অন অ্যাডোলেসেন্ট অ্যান্ড ইউথ ফ্রেন্ডলি হেলথ সার্ভিসেস: ইউবিআর অ্যাপ্রোচ’ শিরোনামে এদিন এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে কিশোর-কিশোরীরা কীভাবে নিজেদের মোকাবিলা করবে, নিজেদের ভাবনা কীভাবে পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করবে আর সে ভাবনা থেকেই ইউবিআর দেশের ৯টি জেলার ১২টি উপজেলায় বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে স্বাস্থ্যসেবা ও পরামর্শ সেবা দিয়ে আসছে। এছাড়াও ২০১৬ সাল থেকে নিজেদের এ প্রকল্পের উদ্যোগে নিজস্ব সেবাকেন্দ্রের বাইরে নিদির্ষ্ট উপজেলাগুলোতে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতেও যুববান্ধব কর্নারের মাধ্যমে পরামর্শ সেবা দেওয়ার কাজটি করে আসছে ইউবিআর। আর এ কাজে তাদের সহায়তা করছে প্রশাসন। ইউবিআর মনে করছে, সরকারি উদ্যোগে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে এ সেবাকে হাতের নাগালে নিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ৯ বছর ধরে ইউবিআর প্রকল্প দেশের ১২টি উপজেলার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কমিউনিটিতে ৯ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর ও যুবকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার (এসআরএইচআর) নিয়ে কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

সভায় ইউবিআর বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স এর যুব সংগঠক জুবায়ের যুব ফোরামের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ১০- ১৯ বছর বয়সের কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০-২৪ বছরের যুবাদেরকেও এ সকল উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমি সুপারিশ করছি।’

অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ড দূতাবাসের প্রতিনিধি মাশফিকা জামান সাতিয়ার ইউবিআর লেসন লার্নিংগুলি মিনিস্ট্রিতে শেয়ার করবেন যাতে মেইনস্ট্রিমিং করা যায় বলে জানান।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে ১২টি উপজেলায় যারা এসব সেবাকেন্দ্রগুলোতে যারা কাউন্সিলিং এর কাজ করছেন এবং যারা সেবা গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে থেকে অনেকেই বক্তব্য রাখেন। তাদেরই একজন রেনুকা চাকমা। তিনি জানান, বাল্যবিবাহ, প্রেম, শরীরবৃত্তীয় কথা, মাদক, বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে সর্ম্পক, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যৌনশিক্ষা নিয়ে কথা বলা এমনিতেই খুব কঠিন বিষয়। আর দুর্গম এলাকাতে, যেখানে শিক্ষার কোনো ছোঁয়াই লাগেনি সেখানে এসব কথা ভাবতে পারাও অনেক কঠিন। কিন্তু ইউবিআরের সঙ্গে থাকার কারণে তিনি নিজে এবং অন্যদেরকে সচেতন করতে পেরেছেন।

দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ড. দীবালোক সিংহের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্ব্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন বলেন, “ইউবিআর বাংলাদেশ এ্যালায়েন্স এর যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক ‘আমি ও আমার পৃথিবী’ একটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ।” তাই তিনি এটাকে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস ব্যক্ত করেন। এছাড়া ইউবিআর এর যুববান্ধব সেবার বিগত ৯ বছরের মাঠ পর্যায়ের কাজের ইতিবাচক ফলাফল ও অভিজ্ঞতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহিত কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিএনপিএস (বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, এফপিএবি (ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ), আরএইচএসটিইপি (রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম), বিএপিএসএ (অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেন্টিং অব সেপটিক অ্যাবরশন, বাংলাদেশ), পিএসটিসি (পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড টেনিং সেন্টার), ডিএসকে ( দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র), বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন ডেভোলপমেন্ট এবং নারীপক্ষের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সারাবাংলা/জেএ/একে

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন