বিজ্ঞাপন

জেকেজি’র ব্যবহৃত বিছানা-পিপিই ফেরত দেওয়ার নির্দেশ

July 3, 2020 | 2:08 am

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষার জন্য ওভাল গ্রুপের জেকেজি হেলথকেয়ারকে নমুনা সংগ্রহের জন্য সরবরাহ করা বিছানাপত্র ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) হস্তান্তর করার জন্য তিতুমীর কলেজকে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১ জুলাই) তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ সকল সামগ্রী হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা.নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, জেকেজি হেলথকেয়ার নামক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে সন্দেহজন কোভিড-১৯ রোগী থেকে নমুনা সংগ্রহ করছিল। ওই কাজের জন্য জেকেজি আপনার প্রতিষ্ঠানকে নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি নির্ধারিত স্থান হিসেবে ব্যবহার করছিল। কিছু কিছু অনভিপ্রেত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন ২০২০ থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতর জেকেজি’র সঙ্গে নমুনা সংগ্রহসহ সকল সমঝোতা চুক্তি বাতিল করেছে।

তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া চিঠিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় আপনার প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত নমুনা সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত বিছানাপত্র (বেড) ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীসমূহ (পিপিই) অতিসত্বর স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ করা হলো। এতে মহাপরিচালকের সম্মতি আছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ২৩ জুন তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে গেছে। আমি এ বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মহোদয়কেও জানিয়েছি। এছাড়াও আমাদের সচিব মহোদয় এবং ডিজি মহোদয়কে জানিয়েছি।আমি স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আমার কলেজ ক্যাম্পাসে কী কী আছে তা দেখিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘আমার কলেজ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ধরনের কাজ হচ্ছে। এমন অবস্থায় আসলে জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্মীদের ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস আমার এখানে এখনও আছে। সেগুলো তো আর কলেজ প্রশাসন নিরাপত্তা দিয়ে রাখতে পারবে না বেশিদিন। তাই আমি স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করি। এর পরে তারা এই নির্দেশনা দেয়। আজ (২ জুলাই) কিছু জিনিস নিয়ে গেছে। বাকিগুলোও ধীরে ধীরে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।’

এর আগে গত ১৬ জুন সারাবাংলা.নেটে ‘করোনা পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার জাল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে তাদের নানা রকমের প্রতারণার বিষয়ে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানের আরও আর্থিক দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের কাছে।

বিজ্ঞাপন

২৩ জুন প্রতিষ্ঠানটির পাঁচজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।

২৪ জুন নমুনা পরীক্ষার জন্য জেকেজি হেলথকেয়ারকে দেওয়া নমুনা সংগ্রহ, বুথ স্থাপন ও প্রশিক্ষণের সব অনুমতি বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই দিন জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির এবং তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

২৭ জুন করোনাভাইরাসের পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহকারী চক্রের অন্য চার সদস্যকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই চারজন হলেন, ওভাল গ্রুপের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

করোনার ভুয়া রিপোর্ট: জেকেজির আরিফুলসহ ৪ জন কারাগারে
রিমান্ডে থেকেও ‘ইয়াবা চাইছেন’ জেকেজি’র আরিফুল
সরকারি চাকরি করেও ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি’র চেয়ারম্যান
গ্রেফতারের সংবাদ শুনে তিতুমীর কলেজ থেকে পালালো জেকেজি’র কর্মীরা
চিকিৎসকরা পেত না পিপিই, জেকেজির জন্য ‘আনলিমিটেড’
সরকারি খরচে বেসরকারি ‘প্রতারণা’ জেকেজি হেলথ কেয়ারের
অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ধমক দিয়ে কাজ করাত জেকেজি হেলথকেয়ার

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন