বিজ্ঞাপন

ঈদে মিলাদুন্নবীর সমাবেশে শান্তিকামী মানুষদের জেগে ওঠার আহ্বান

October 30, 2020 | 12:59 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আজ থেকে ১৪৫০ বছর আগের এই দিনে (১২ রবিউল আউয়াল) সাম্য মৈত্রী ও মানবিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে পৃথিবীতে আগম ঘটেছিল মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর। ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ওফাত বরণ করেন। এই দিনটি স্মরণে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে শাহ সূফি মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে শোভাযাত্রা ও সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শোভাযাত্রা ও সমাবেশ থেকে ফ্রান্সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অবমাননার নিন্দা জানানো হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা নিয়ে শান্তিকামী মানুষদের জেগে ওঠার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে মুসলিম বিশ্বকে একতাবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।

আরও পড়ুন- ঈদে মিলাদুন্নবী আজ, মহানবীর (সা.) শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান

শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকায় আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়ার উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে জশনে জুলুসে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে জশনে জুলুস বের হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। একইসঙ্গে ফ্রান্সে মহানবী (সা.)কে অবমনানার প্রতিবাদও জানা হয় শোভাযাত্রা থেকে। পরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

মাইজভান্ডার দরবার শরীফের ইমাম পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফিজের প্রেসিডেন্ট আওলাদে রাসূল (সা.) শাহ সূফি মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন। অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি ছিল জশনে জুলুসে। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে জশনে জুলুসে অংশ নিতে বলা হলেও অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখা সম্ভব হয়নি শোভাযাত্রায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। কোনো ধর্মের অনুসারীরাই তাদের ধর্মীয় শীর্ষ ব্যক্তিত্বের অবমাননা মেনে নিতে পারে না। তাই মুসলিম হিসেবে মহানবী (সা.)-এর অবমাননা আমরা কিভাবে মেনে নিতে পারি? পারি না।

বিজ্ঞাপন

কাউকেই অন্য ধর্মের বিশ্বাসে আঘাত না হানার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকার আছে। সেই অধিকার কেউ ক্ষুণ্ন করতে পারে না। অন্য ধর্মের কারও বিশ্বাসের ওপর আঘাত করা যাবে না। বরং ধর্মকে নিয়ে নোংরা খেলায় মেতে ওঠা অপশক্তি যারা আছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশে দেশে শান্তিকামী মানুষের জাগরণ ঘটাতে হবে, শান্তিকামী মানুষদের জেগে উঠতে হবে।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী বলেন, পৃথিবী থেকে অন্ধকার-অনাচার-ব্যভিচারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর করতে আলোর মশাল নিয়ে শুভাগমন করেন বিশ্ব মানবতার মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারী জাতির কোনো মর্যাদা-অধিকার ছিল না। মহানবী (সা.) নারী জাতিকে মর্যাদা ও শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনিই পৃথিবীতে সাম্য মৈত্রী সুবিচার এবং সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ গড়ে তোলেন। তাই মহানবী’র (দ.) এই দুনিয়ায় শুভাগমন সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ। এজন্যই নিয়ামতের শুকরিয়ার্থে আমরা জশনে জুলুস উদযাপন করি।

তিনি বলেন, প্রকৃত ধার্মিক ধর্মের নামে হঠকারী ও উগ্রতায় বিশ্বাস করে না। কোনো ধর্মীয় নেতা বা ধর্মযাজকের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও কটূক্তি ধর্মের প্রকৃত অনুসারীরা কখনোই করতে পারে না। মুসলমানরা যদি অন্য ধর্মের ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে, তাহলে ওই ধর্মের অনুসারীদের ভালো লাগবে না। অন্যরা যদি মুসলমানদের ধর্মকে আঘাত করতে চায়, মুসলমানদেরও ভালো লাগবে না।

বিজ্ঞাপন

সৈয়দ সাইফুদ্দীন আরও বলেন, অন্য ধর্ম বিশ্বাসের ওপর আঘাতের নাম বাকস্বাধীনতা হতে পারে না। ফ্রান্সসহ ইউরোপের কিছু দেশ মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবর্তে সংঘাত উসকে দিচ্ছে। আমি এই অমানবিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এজন্য মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আলোচক মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল-আযহারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, আঞ্জুমান সাধারণ সম্পাদক খলিফা মো. আলমগীর খাঁন, সহসাধারণ সম্পাদক সাবেক এসপি আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা বাকের আনসারী, মাওলান ইসমাইল সিরাজী।

অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সমৃদ্ধি এবং দেশবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ সূফি সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন