বিজ্ঞাপন

ভ্যাকসিন নিয়েও লুটপাটের আয়োজন চলছে: ফখরুল

January 11, 2021 | 8:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভ্যাকসিন নিয়েও লুটপাটের আয়োজন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের ক্ষমতা দখলের দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালনে বিএনপির উদ্যোগে ‘এক এগার: বিরাজনীতিকরণের ধারাবাহিকতায় চলমান ফ্যাসিবাদ: গণতন্ত্রই মুক্তির পথ’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই চরম দুর্দিনে করোনাভাইরাস যখন আমাদের গোটা বিশ্বের ব্যবস্থাকে পাল্টে দিচ্ছে। তখন আমরা অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে দেখছি যে, ভ্যাকসিন নিয়েও লুটপাটের আয়োজন চলছে। আমরা এই লুটপাটের অর্থনীতিটাকে পরিবর্তন করতে চাই, আমরা এখানে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা এখানে সত্যিকার অর্থেই সাধারণ মানুষের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে চাই। আমরা এখানে সত্যিকার অর্থেই মানুষের বাক স্বাধীনতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

১/১১ এর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখে যে অভ্যুত্থান-এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার ছিল না। এটা ছিল বাংলাদেশের সত্যিকার অর্থেই দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করবার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের একটি অংশ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা সেদিন একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে, সাংবিধানিক সরকারকে উৎখাত করে অভুত্থান ঘটিয়েছিল, তারাই আজ ক্ষমতায় বসে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করছে, গণতন্ত্রকে ধবংস করে ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, যে স্বপ্ন— সত্যিকার অর্খে একটা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, একটি উন্নয়ন-উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করা- সেই স্বপ্নকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিচ্ছে আজকের সরকার।’

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে যখন নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে সেই শক্তির মদদপুষ্ট হয়েই আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে সম্পূর্ণভাবে বিনা ভোটের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাদেরকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা হয়। ২০১৮ সালে একই কায়দায় আগের রাত্রেই জনগণের ভোটের অধিকারকে চুরি করে, হরণ করে আবার একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় বসানো হয়।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই একটা বিশেষ মহল বাংলাদেশকে নিজের করায়ত্ব করে রাখার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের আত্মা হচ্ছে গণতন্ত্র। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সেই গণতন্ত্রকে তারা ধবংস করে দিয়েছে। তারই ফলোশ্রুতিতে ১/১১ সংঘটিত হয়েছে এবং তারই ধারাবাহিকতায় আজকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুরোপুরিভাবে ধবংস করে দিয়ে, অধিকারগুলোকে হরণ করে একটি দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হচ্ছে। আজকের যে বাংলাদেশ এই বাংলাদেশ মানুষ কখনো চায়নি।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১/১১ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। দুই বছর থেকে ওরা হাতে ধরে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে গেছে। তার ধারাবাহিকতায় আজকে পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তারা এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এই সরকারের প্রতি অতিষ্ঠ, বিক্ষুব্ধ। এই সরকারের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায়। এদেশের জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়, এদেশের জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। এদেশের জনগণ নিরাপদভাবে বসবাস করতে চায়। সেই অবস্থায় যদি দেশকে আবার ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে মাদার অফ ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২০০৭ সালের ১/১১ হলো একটা কালো দিবস, একটা অভিশপ্ত দিবস। এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয়, সারা বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক মানুষের মুখে চুনকালি দেওয়া দিবস।’

বিজ্ঞাপন

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এক-এগারোর যে বিরাজনীতিকরণের তাণ্ডব তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন, সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তার পরিবার।’

তিনি বলেন, ‘১/১১’র কুশিলবরা চেষ্টা করছে নানাভাবে ম্যাডামকে রাজি করাতে। কিন্তু ম্যাডাম কোনো অবস্থাতেই সংবিধানের বাইরে অথবা গণতন্ত্রের প্রশ্নে মাথা নত করেন নাই। সেকারণে আজকে দুর্ভোগ, আজকে তিনি গৃহবন্দি। আর আজকে যারা বেনিফিট নিছেন তারা আপসকামী।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি পরিচালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/এজেড/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন