বিজ্ঞাপন

ঢাকা সফরে রামনাথ কোবিন্দ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন প্রত্যাশা

December 14, 2021 | 11:37 pm

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ সফরকে স্বাগত জানিয়েছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ সফর দুই দেশের সরকার ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে হজরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে স্বাগত জানাবেন।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কেরও ৫০ বছর পূর্ণ হলো এ বছর। এই সময়েই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে ঢাকা আসছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এটি তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। তার সফরকে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, নানা দিক থেকে ডিসেম্বর মাস আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সেই থেকে ভারতের জনগণ ও আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। সেদিক থেকে ডিসেম্বর মাস আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশে উপস্থিতি আমাদের জন্য বাড়তি উপাদান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি আশা করছি না এই সফরে চাওয়া-পাওয়া কিংবা দেওয়ার মতো কিছু বিষয়ে আলোচনা হবে। এখানে সে সুযোগ যেমন নেই, তেমনি প্রটোকলেও যাচ্ছে না। তবে ভারত রাষ্ট্রপতির এ সফরে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতেও পারে। না হলেও এ নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার পথ তৈরি করবে এ সফর।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. রাশেদুজ্জামানের মতে, ভারতের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফর দুই দেশের জনগণের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ ধরনের সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করে। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। ভারত রাষ্ট্রপতির সফর সেই সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সরকার ও জনগণ— উভয় পর্যায়ে অবশ্যই মতপার্থক্য থাকবে। তবে মুক্তিযুদ্ধ কিংবা স্বাধীনতার বিষয়ে এই ভেদাভেদ থাকা যেমন উচিত নয়, আশা করছি থাকবেও না। বরং দুই দেশের সম্পর্ক আরও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলেই মনে করছি।

বিজ্ঞাপন

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন রামনাথ কোবিন্দ। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ তাকে স্বাগত জানাবেন। বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। সেখান থেকে ১১টা ২৫ মিনিটে ভারতের রাষ্ট্রপতি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন ১২টা ১০ মিনিটে এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে। এর আগে বিকেল ৩টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আবদুল মোমেন সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন রামনাথ কোবিন্দ। সেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নৈশ ভোজে অংশ নেবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে সকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতীয় কুচকাওয়াজ আয়োজনে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। এদিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে ৪টা ৩১ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।

সফরের শেষ দিন শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রমনা কালী মন্দিদের জন্য সদ্য সংস্কার করা অংশের উদ্বোধন করবেন রামনাথ কোবিন্দ। এদিন দুপুরে দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন