বিজ্ঞাপন

‘হৃদয়ে পিতৃভূমি’ ও আ.লীগের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি টুঙ্গিপাড়ায়

March 9, 2022 | 9:24 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মুজিববর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনকে নতুন মাত্রায় পালিত হবে। জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ব্যবস্থাপনায় ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি এবার জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত গোলাপগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পালন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৯ মার্চ) বিকেলে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার স্মৃতি বিজড়িত টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে দলের পক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ব্যবস্থাপনায় ‘টুঙ্গিপাড়া: হৃদয়ে পিতৃভূমি’ প্রতিপাদ্যে কর্মসূচি পালন করবে। এ লক্ষ্যে আগামী ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধানিবেদন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে এক সমন্বয় সভা সকালে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান আয়োজনসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এ সভায় সবাইকে স্বাগত জানান জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। তিনি জাতীয় কমিটি এবং বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে জাতির পিতার সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানটি যথাযথ ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণভাবে আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করে বক্তব্য দেন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, টুঙ্গিপাড়া জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধানিবেদন অনুষ্ঠান সফল করে তুলতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সভায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সংস্কৃতি বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান নূর, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম বলেন, ‘আপনারা সৌভাগ্যবান এই কারণে যে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর কেউ পাবে না। আমরা এখন যারা আছি তারাই পাবেন। ভবিষ্যৎ বংশধররা আর এই দিনটা আর পালন করতে পারবে না। আপনারাও সৌভাগ্যবান, গোটা জাতির এখন যারা জীবিত আছি, তারাও সৌভাগ্যবান।’

জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে ১৭ মার্চ আয়োজন করছি। এটার একটা নাম দেওয়া হয়েছে হৃদয়ে পিতৃভূমি। এই আয়োজনে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, সঙ্গে আলোচনা সভা হবে। ১৭ তারিখের পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। মুজিববর্ষে জাতির পিতার সমাধিতে আমরা সরাসরি উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা জানাতে পারিনি। এবার আশা করছি যে, সেই সুযোগটা পাচ্ছি। হৃদয়ে পিতৃভূমি পুরো কর্মসূচিগুলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমন্বয় করে পালন করা হবে।

আওয়ামী লীগের সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি

১৭ মার্চের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। সেখানে তারা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা অর্পণ করবেন। সেদিন একটি শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ মার্চ বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সে আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি উপস্থিত নাও থাকতে পারেন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেখানে উপস্থিত থাকবেন এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এবং স্বাধীনতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন বলে জানান শেখ সেলিম। আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কিছু অতিথি ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত থাকতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

১৮ মার্চ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়ায় আরেকটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেখানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন কি না সেটা পরে জানানো হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সভায় অংশ নেবেন এবং বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং স্বাধীনতার বিভিন্ন বিষয় সেখানে তুলে ধরা হবে। শেখ সেলিম জানান, প্রয়োজন হলে কোনো বুদ্ধিজীবীকেও নেওয়া হতে পারে। তবে ১৮ মার্চ শবে বরাত হওয়ায় সব অনুষ্ঠান সন্ধ্যার আগেই শেষ করা হবে।

১৯ মার্চ ছাত্রলীগ সেখানে তাদের কর্মসূচি পালন করবে। ২০ মার্চ শ্রমিক লীগ, ২১ মার্চ কৃষক লীগ, ২২ মার্চ যুবলীগ, ২৩ মার্চ যুব মহিলা লীগ, ২৪ মার্চ মহিলা আওয়ামী লীগ ও ২৫ মার্চ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়ায় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) তাদের চিকিৎসকদের নিয়ে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

এর পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধু লোকজ মেলা হবে ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। বিভিন্ন জেলা থেকে মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। ২৫ মার্চ সব আয়োজন শেষ করে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করবে আওয়ামী লীগ।

এছাড়া ১৭ মার্চ সকালে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং সারাদেশের সব কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা হবে। সেদিন সকাল সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।

উল্লেখ্য, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেটে সপরিবারে শহিদ হন তিনি। পরের দিন টুঙ্গিপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে মা ও বাবার পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন