Dust pollution reaches an alarming stage in Dhaka and many deaths as well as several million cases of illness occur every year due to the poor air quality, Dhaka, Bangladesh
January 28, 2023 | 12:11 am
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: জানুয়ারির শুরু থেকেই ‘অস্বাস্থ্যকর’ ও ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ থাকলেও গত দুই দিন থেকে ঢাকার বায়ু পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক’। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পরিমাপক সংস্থা আইকিউএয়ারের বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, ২৫ তারিখ দিবাগত রাত থেকে ঢাকার বাতাস দিনের অধিকাংশ সময়ে খুবই বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে।
আইকিউএয়ারের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি ঢাকার বায়ু পরিস্থিতি ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ থাকার পর ২৫ তারিখ দিবাগত রাতে ‘বিপজ্জনক’ অবস্থায় চলে যায়। রাত একটায় এটি বায়ুমান সূচকে ৩১০ পর্যন্ত পৌঁছে, যা সকাল সাতটায় ছিল সর্বোচ্চ ৪৬৪। এই মান জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এদিন সকাল এগারোটায় এটি ছিল ৩০৫। পরে কিছুটা কমে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে আসে। ২৬ তারিখ সারাদিনই বায়ু পরিস্থিতি 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' থেকে নামেনি। রাত আটটায় এটি আবারও ৩০০ পার হয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যায়। সেসময় ঢাকার একিউআই ছিল ৩১৯। এরপর কিছুটা নেমে ২৭ তারিখ দিবাগত রাত তিনটা পর্যন্ত 'খুবই অস্বাস্থ্যকর' পর্যায়ে থাকার পর আবারও বিপজ্জনক অবস্থায় যায় ঢাকার বায়ু যা সকাল ছয়টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত ছিল। রাত তিনটায় একিউআই ছিল ৩১৯ আর ভোর পাঁচটায় সর্বোচ্চ ৩৬৭।
আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো বায়ু, ৫১ থেকে ১০০ পরিমিত, ১০১ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০ এর অধিক হলে তা বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয়। বায়ু পরিস্থিতি অস্বাস্থ্যকর, খুবই অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক পর্যায়ে গেলে নাগরিকদের কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়। মাস্ক পরা, নির্দিষ্ট সময়ে বাইরে না যাওয়া, ব্যায়াম বা সাইক্লিং না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র ক্যাপস ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই চার মাস শুষ্ক মৌসুম। এই সময়ে বায়ু মানের ক্রমাবনতি ঘটতে থাকে। জুন থেকে আগস্ট, অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে বায়ুমান কিছুটা ভালো হয়। কিন্তু গ্রীষ্ম মৌসুমে বায়ু দূষণের পরিমাণ সারা বছরের চেয়ে প্রায় ৬০ ভাগ বেশি হয়ে থাকে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া দৈনিক বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দিনের তুলনায় রাতে দূষণ বেশি হয়। দেশে রাত ১টায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া সকাল ৭টায় বায়ু বেশ দূষিত থাকে। ফলে সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সময় প্রাতঃভ্রমণের উপযোগী নয়। এ সময় যেসব বাচ্চারা স্কুলে যায়, তারাও স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে। রাতে আন্তঃজেলা বাস-ট্রাক চলাচল করে, রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া হয় ও অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রি উৎপাদন শুরু করে। এছাড়া সারা দিনের ক্যাপচার করা দূষিত বায়ুও রাতের বেলা রিলিজ হয়, ইটভাটা কাজ শুরু করে। ফলে রাতে অত্যধিক বায়ু দূষণ চলতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকালে যানবাহন চলাচলের ফলে সৃষ্ট দূষণ নতুন করে যুক্ত হয়ে মাত্রা বাড়ায়। ফলে সকালে যারা প্রাতঃভ্রমণ কিংবা অফিস ও স্কুলের উদ্দেশে বের হন, তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। বার বার বলার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি কানে তুলছে না।’
সারাবাংলা/আরএফ