বিজ্ঞাপন

নমনীয় মেয়র, দোভাষের বক্তব্যকে বললেন ‘স্লিপ অব টাং’

August 14, 2023 | 11:23 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সক্ষমতা নেই- চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের এমন বক্তব্যকে ‘স্লিপ অব টাং’ বলে অভিহিত করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ আগস্ট) নগরীর টাইগারপাসের চসিক ভবনে জলাবদ্ধতা নিরসনবিষয়ক সেবাসংস্থাগুলোর সমন্বয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অনেক সময় কথা বলতে গেলে ‘স্লিপ অব টাং’ করে বের হয়ে যায়। অনেকে বক্তৃতা দিতে গেলে অনেক ভাষা চলে আসে। হয়তো সিডিএ’র চেয়ারম্যান সাহেব কথার ছলে বলে ফেলেছেন আরকি। এটাকে আমরা দৃঢভাবে না ধরে সহজভাবে ধরে নেই। সক্ষমতা প্রত্যেক সংস্থার আছে। সক্ষমতা নেই এই কথা ঠিক নয়। উনি বলার ফাঁকে হয়তোবা বলে ফেলেছেন।’

এর আগে গত বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সিডিএ সম্মেলনে কক্ষে সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতার জন্য সিডিএ জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে মন্তব্য করে জহিরুল আলম দোভাষ বলেছিলেন, ‘প্রকল্পটি সিডিএ’র করার কথা নয়। সিটি করপোরেশন না পারায় এটি সিডিএকে দিয়েছে সরকার। জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সিডিএ’র না।’

বিজ্ঞাপন

সেসময় ‘মেয়র সাহেব ভুল তথ্য দিয়ে সিডিএর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান।

এদিকে, নগরীর অনেক খাল অস্তিত্ব হারিয়েছে জানিয়ে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এটা চলতি বছরের ২৩ জুন পর্যন্ত সময়সীমা ছিল। সমগ্র চট্টগ্রামে ৭২টি খাল ছিল। ইতোমধ্যে অনেক খাল ভরাট হয়ে গেছে। যার ফলে এখন ৫৬টি খাল আছে।’

‘এর মধ্যে ৩৬টি খালের খনন কাজ চলছে। সুইচ গেইটের কাজ চলছে। এগুলো এখনও কিন্তু শেষ হয়নি। আরও ২১টি খাল আছে। এর মধ্যে অনেক খাল অস্তিত্ব হারিয়েছে। অনেক খাল প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। ভরাট হয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘বর্তমানে যে প্রকল্পের কাজ চলছে সেটা এগিয়ে চলছে। সেটা পুরোপুরি শেষ হয়নি। নগরীতে জলাবদ্ধতা বা জলজট যা হয়েছে বিগত ৩০ বছরে এরকম প্রবল বৃষ্টিপাত এই অঞ্চলে আর হয়নি। আপনারা দেখেছেন সাতকানিয়াসহ দক্ষিণের বিভিন্ন অঞ্চল বন্যায় ডুবে গেছে। যেহেতু প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি হয়নি তাই খালের মাটি পুরোপুরি সরানো হয়নি, স্লুইচ গেইট দিয়েছে- সেগুলোর কাজ শেষ হয়নি, পাম্প হাউজগুলোর প্রকল্প ছিল- শেষ হয়নি।’

‘এই কারণে স্লুইচ গেইটগুলোর কাজ পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় জোয়ারের পানি বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। যদি সম্পন্ন হতো প্রবল জোয়ারও এভাবে ঢুকতে পারতো না।’

এক বছরের মধ্যে সব প্রকল্পের কাজ শেষ হবে জানিয়ে মেয়র আরও বলেন, ‘প্রকল্পের পরিচালক আশ্বস্ত করেছেন এক বছরের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। কাজ যদি শেষ হয়ে যায় জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাব। দেখেন পানি উঠবে। এটা জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীতে সাত মিটার পলিথিনের আস্তর পড়ে গেছে। ড্রেজিং করে চার মিটার সেখানে পরিষ্কার করতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে আগে প্রাকৃতিক জলাধার ছিল। সেগুলো কিন্তু এখন নেই। সব জায়গায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। দালানকোঠা হয়েছে। পানি যাবে কোথায়? পানি যাওয়ার একমাত্র পথ নদী। সেজন্য খালগুলো খনন করে পানি যাওয়ার পথকে প্রশস্ত করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

‘খালগুলো খনন করে সেনাবাহিনী সিডিএকে বুঝিয়ে দেবে। সিডিএ সিটি করপোরেশনকে। কারণ, সব দায়ভারতো চসিকের কাঁধের ওপর পড়ে। শুধু এই প্রকল্প নয় আরও যেসব প্রকল্প আছে সবগুলোতে যেসব সেবা সংস্থা আছে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হোসেন খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু রায়হান দোলন, পুলিশের এডিশনাল কমিশনার এম এ মাসুদ, সিডিএ’র সচিব মিনহাজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শাহ আলী, চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, কর্ণফুলী সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক রাজীব দাশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন