বিজ্ঞাপন

শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে ৪ স্তরের নিরাপত্তা, থাকছে ২টি বিশেষ ট্রেন

April 10, 2024 | 4:07 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭ তম ঈদুল ফিতরের জামাত। প্রতিবছর এ ঈদগাহ মাঠে আশেপাশের জেলা ছাড়াও দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক লাখ মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারের ঈদ জামাতে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা। নিরাপত্তায় কাজ করবে এক হাজার ১১৬ পুলিশ সদস্য। মোতায়েন থাকবে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় এক সংবাদ বিফ্রিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এ কথা জানান।এদিন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত অফিসার ও পুলিশ সদস্যদের ব্রিফিং করেন তিনি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ঈদ জামাতের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ও নিবিঘ্ন করতে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দান ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কাজ করবে এক হাজার ১১৬ পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে পোশাকে ৮৮০ জন, সাদা পোশাকে ১৮৭ জন। ট্রাফিকে ৪৯ জন অফিসার ফোর্স ছাড়াও মোতায়েন থাকবে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব। আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে এবার অন্যান্য বারের চেয়ে দেড়গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পুরো মাঠ ও আশপাশ। এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিক্টেটর। আর আকাশে উড়বে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা।

পুলিশ সুপার জানান,  বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

বিজ্ঞাপন

বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বড় বাজার মসজিদের খতিব মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ। মুসল্লির নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।

ছাতা নিয়েও ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে আবহাওয়া যদি খারাপ থাকে কিংবা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ছাতা নিয়ে ময়দানে প্রবেশের কথা আগের দিন জানিয়ে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঈদ-উল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে মুসুল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুইটি স্পেশাল ট্রেন ভৈরব-কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আসা যাওয়া করবে।

বিজ্ঞাপন

দূর দূরান্ত থেকে আগত মুসুল্লিদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি এবং পুলিশ ও শতাধিক র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে কড়া নজরদারিতে নিয়োজিত থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন।

ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু তারপরও ভাটা পড়েনি ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদের জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে।

জনশ্রুতি আছে, প্রথম জামাতে এক লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোক মুসল্লি জমায়েত হন। এরপর থেকেই ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়। ১৯৫০ সালে স্থানীয় জমিদার দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এ মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে। প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসলি­ নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।

মুসল্লির উপস্থিতির দিক থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের জামাতই এ উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ জামাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

সারাবাংলা/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন