বিজ্ঞাপন

ঈদের দিনেও স্বাভাবিক হাসপাতালের সেবা, দুর্ঘটনার রোগী বেশি

April 11, 2024 | 10:10 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদের দিন রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং বারডেম মহিলা ও শিশু হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করে স্বাভাবিক চিত্রই দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

এই তিনটি হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্হিবিভাগ ছাড়া অন্যান্য দিনের মতোই হাসপাতালের সব বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। এদিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়।

ঢামেকের আবাসিক সার্জন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ ঈদের দিন হলেও হাসপাতালের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে। শুধুমাত্র আউটডোর ছাড়া সব বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিক। আজ সড়ক দুর্ঘটনা, মারামারি ও অন্যান্য আঘাতজনিত অসুস্থতার রোগী বেশি আসছে। তবে এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আসা রোগীর সংখ্যা বেশি।’

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ছুটির দিনে ফাঁকা রাস্তায় আইন মেনে সাবধানে মোটরবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চালানোর পরামর্শ দেন ডা. আলাউদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

হাতে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে আসা এক রোগীর আত্মীয় সালাম মিয়া সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাতে আঘাতজনিত কারণে চাচাতো ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখিয়েছি। হাতে ব্যান্ডেজ করে ওষুধপত্র দিয়েছে। ছুটির দিন হলেও ডাক্তার-নার্স সবাই আন্তরিকভাবেই সেবা দিয়েছেন।’

এদিকে, ঢামেকের সেবা কার্যক্রমের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন সারাবাংলার সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট হাবিবুর রহমান। হাসপাতাল ঘুরে এসে তিনি বলেন, ‘আমি ছবি তুলতে গিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করি সেখানে। এই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ জন রোগী ঢামেকে আসেন। যাদের বেশিরভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

বিজ্ঞাপন

দুপুরের পর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে একই ধরনের চিত্র চোখে পড়ে। সেখানে হাসপাতালটির প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোবিন্দ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয়। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আজ ঈদের দিন হলেও আমাদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ নেই। আমাদের এখানে বেশিরভাগ পুড়ে যাওয়া রোগী বেশি আসেন। আমরা সবাইকে সাধ্যমতো সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আজ ছুটির দিন হলেও এখানে রোস্টার অনুযায়ী, ডাক্তার, নার্স, কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করছেন। সেবা কার্যক্রমে কোনো বিরতি নেই।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১৫ জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের বেশিরভাগ পুড়ে যাওয়া বা অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হওয়া রোগী।

এদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত বারডেম মহিলা ও শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নতুন রোগী নেই বললেই চলে। তবে রোগী না থাকলেও বর্হিবিভাগ ছাড়া হাসপাতালের অন্যান্য সব বিভাগের কার্যক্রম চলছে। জরুরি বিভাগে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখারুল কাওসার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ ছুটির দিন হলেও আমাদের হাসপাতালের সব বিভাগ খোলা আছে। আমাদের এই হাসপাতাল মহিলা ও শিশুদের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। সকাল থেকে মাত্র কয়েকজন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ঈদের দিনে রাজধানীর হাসপাতালগুলোর সেবা কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও মুগদা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কয়েকটি কক্ষ ও গাইনি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং রোগীদের খোঁজ-খবর নেন। এ সময় তিনি ঢামেকে বিভিন্ন দেশ থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা বাইরের দেশ থেকে পড়তে বাংলাদেশে এসেছো। ভালোভাবে পড়াশুনা করে ভালো ডাক্তার হও। নিজের দেশ এবং আমাদের দেশের গৌরব তোমরা। তোমাদের মঙ্গল কামনা করি।’

হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীরর আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুল আলম চৌধুরী, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানসহ চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন। সেখানেও তিনি দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং রোগীদের খোঁজ-খবর নেন। তারপর তিনি যান মুগদা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেও তিনি রোগীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন