বিজ্ঞাপন

শহীদ জননীর দেখানো পথে চলি

June 26, 2018 | 7:34 pm

রহমান রা’আদ ।।

বিজ্ঞাপন

 

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যখন ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি “একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি” গঠনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন, যুদ্ধাপরাধী নিজামী কিংবা মুজাহিদ কি ভাবতে পেরেছিল যে তাদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়ে গিয়েছিল সেদিনই! পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত ইসলাম এবং আলবদরের যুদ্ধাপরাধীরা সামরিক শাসনের সময় আবারও রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ পায়। এরপর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি সরকারের ঘাড়ে পা দিয়ে যুদ্ধাপরাধীরাও রাষ্ট্রক্ষমতায় ভাগ বসায়। রাজনৈতিক এসব ডামাডোলে সাধারণ মানুষের মনে বিস্মৃত হতে বসা একাত্তরের বেদনাবিধুর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবার আশংকা দেখা দিয়েছিল। এসময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবচাইতে বড় আঘাত, একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধিতার প্রতীক গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামীর আমির করে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া।

এর চাইতে বড় অসম্মান বোধহয় হয়না কোন জাতির জন্য। কিন্তু তবুও কেউ জোরেশোরে প্রতিবাদ করার কথা ভাবে নি। কিন্তু চুপ করে থাকতে পারেন নি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য যার সন্তান হাসিমুখে নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছেন, পাকিস্তানীদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাননি, সেই শহীদ রুমির আম্মা এবার নামলেন রাজপথে, ক্ষমতায় আসীন রাজাকারদের বিরুদ্ধে, প্রবল প্রতিবাদ আর সংগ্রামে গড়ে তুললেন জনতার গণআদালত!

বিজ্ঞাপন

তৎকালীন সময়ের অন্যতম শিক্ষিত, অভিজাত এবং রুচিশীলা মানুষ ছিলেন জাহানারা ইমাম। ১৯৬৪ সালে ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানডিয়াগো স্টেট কলেজ থেকে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করেন। এর আগে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী গার্লস হাই স্কুল ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস হাই স্কুলে প্রায় ১২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন শহীদ জননী। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো তিনি পালন করেছেন বিয়ের পর। তখনকার সময়ে পিছিয়ে পড়া নারী সমাজের জন্য তার এসব অর্জন ছিলে অনেক বড় উদাহরণ!

সেই মানুষটিকেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় দিতে হলো সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। তার আদরের ধন রুমি যখন তার সামনে দাঁড়িয়ে বললো, “আম্মা, দেশের এ অবস্থায় তুমি যদি আমাকে জোর করে আমেরিকায় পাঠিয়ে দাও, আমি হয়তো যাবো শেষ পর্যন্ত। কিন্তু তাহলে আমার বিবেক চিরকালের মতো অপরাধী করে রাখবে আমাকে। আমেরিকা থেকে হয়ত বড় ডিগ্রি নিয়ে এসে বড় ইঞ্জিনিয়ার হবো; কিন্তু বিবেকের ভ্রুকুটির সামনে কোনদিনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না। তুমি কি তাই চাও আম্মা?”

অপরিসীম মাতৃস্নেহ একপাশে চাপা দিয়ে বুকে পাথর বেঁধে জাহানারা ইমাম তখন বললেন,  –“…ঠিক আছে, তোর কথাই মেনে নিলাম। দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে। যা, তুই যুদ্ধে যা।…”

বিজ্ঞাপন

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীদের নারকীয় নির্যাতন ও দুঃস্বপ্ন তার জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছিল প্রায় সবই। বেঁচে ছিলেন শুধুমাত্র ছোট ছেলে সাইফ ইমাম জামী যাকে নিয়ে বাকি জীবনটা নীরবে নিভৃতে কাটিয়ে দিতে পারতেন তিনি আরও অসংখ্য শহীদ পরিবারের মত। কিন্তু নিয়তি তার ইতিহাস লিখেছিল ভিন্নভাবে! মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করতে করতে অন্য আরেকটি লড়াইয়ের জন্যে মনে মনে প্রস্তুত হচ্ছিলেন জাহানারা ইমাম। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চক্র, একাত্তরের ঘাতক দালাল রাজাকার আলবদরদের ক্রমশঃ উত্থান তাঁকে বিচলিত করে তুলছিলো। ধর্মান্ধ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী- মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির এই উত্থানকে রুখে দিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালেন জাহানারা ইমাম, আশ্চর্য সাংগঠনিক দক্ষতায়। মাতৃত্ব ছিল যার শক্তি, অবলীলায় তিনি চলে এলেন জাতীয় নেতৃত্বে। যার জন্য বদলে গেল ইতিহাসের গতিপথ, কখনো কল্পনাও করতে পারেনি যা, স্বাধীন বাংলাদেশে সেই মৃত্যু পরোয়ানা লেখা হয়ে গেল হেভিওয়েট সব রাজাকার আলবদরের, একজন শহীদ জননীর হাতে! আমাদের জননীর হাতে।

১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এর আহবায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ ‘গণআদালত’ এর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার অনুষ্ঠান করে। ‘গণআদালাতে’ গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দশটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদন্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।

গণআদালতের এই রায় কাযর্কর করার দাবী জানান আম্মা। এর ফলে তৎকালীন সরকার ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে অ-জামিনযোগ্য মামলা দায়ের করে। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপি গণস্বাক্ষর, গণসমাবেশ, মানববন্ধন, সংসদ যাত্রা, অবস্থান ধর্মঘট, মহাসমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ভয় পেয়ে রাজাকারদের প্রভাবে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২৮ মার্চ, ১৯৯৩ সালে নির্মূল কমিটির সমাবেশে পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন ক্যান্সার আক্রান্ত অসুস্থ ‘আম্মা’।

এর আগে ২৬ মার্চ, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা দিবসে গণআদালত বার্ষিকীতে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গণতদন্ত কমিটি ঘোষিত হয় এবং আরো আটজন যুদ্ধাপরাধীর নাম ঘোষণা করা হয়। এই ঘৃণ্য আটজন যুদ্ধাপরাধীর নামঃ আব্বাস আলী খান, মতিউর রহমান নিজামী, মোঃ কামরুজ্জামান, আবদুল আলীম, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, মওলানা আবদুল মান্নান, আনোয়ার জাহিদ এবং আব্দুল কাদের মোল্লা।

বিজ্ঞাপন

২৬ মার্চ ১৯৯৪ সালে স্বাধীনতা দিবসে গণআদালতের ২য় বার্ষিকীতে গণতদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান কবি বেগম সুফিয়া কামাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে রাজপথের বিশাল জনসমাবেশে জাহানারা ইমামের হাতে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্ট হস্তান্তর করেন। এই সময়েই আম্মা তার সহযোদ্ধাদের প্রতি শেষ নির্দেশ ও আহ্বান জানান। নীচে আম্মার সেই অসামান্য নির্দেশগুলো তুলে ধরা হলোঃ

মৃত্যুর আগে শহীদ জননীর শেষ নির্দেশ :
(শহীদ জননী জাহানারা ইমামের পক্ষ থেকে)
বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আবেদন এবং নির্দেশ

প্রিয় সহযোদ্ধারা,
গত তিন বছর ধরে গোলাম আযম এবং তার সাঙ্গপাঙ্গ ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আপনারা লড়ছেন। বাঙালী জাতি হিসেবে আপনাদের একতা ও সাহস তুলনাহীন। এই সংগ্রামের শুরুতে আমিও আপনাদের একজন ছিলাম। আমরা শপথ করেছিলাম বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার।

মরণব্যধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আমি আমার শেষদিনগুলো গুনছি। তবে আমি আমার প্রতিজ্ঞা রেখেছি। আমি লড়াই থেকে পিছু হটিনি। কিন্তু অবশ্যম্ভাবী এই মৃত্যু ঠেকানোরও কোনো পথ নেই। তাই আমি আবারও লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্তু যুদ্ধ চালিয়ে যেতে আমাদের নেওয়া সেই শপথটার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আপনাদের সেই প্রতিজ্ঞা পূরণ করতেই হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে। যদিও আমি আপনাদের মাঝে থাকবো না। কিন্তু আমি ঠিকই জানবো যে আপনারা- আমার লাখো বাঙালী সন্তানেরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে স্বাধীন সোনার বাংলায় বসবাস করছেন।

আমাদের সামনে এখনও দীর্ঘ এবং দুরূহ পথ। এই লড়াইয়ে সকল শ্রেনীর মানুষ যোগ দিয়েছেন। ভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট থেকে এসেছেন তারা, আর তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, নারী, ছাত্র-যুবারা। আর আমি ভালো করেই জানি জনগনের চেয়ে চেতনায় একরোখা আর কেউ নেই। জনগণই শক্তি। তাই আমি আপনাদের কাছে, বাংলাদেশের জনগনের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বয়ে নেয়ার এবং গোলাম আযম ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর দায়িত্বটা সঁপে দিলাম।

ইনশাল্লাহ জয় আমাদের হবেই।
-জাহানারা ইমাম!

 

এই বাংলাদেশে একাত্তরের নির্লজ্জ যুদ্ধাপরাধী নরপিশাচ একাত্তরের ‘দেলু রাজাকার’কে অজস্র ধর্মান্ধ মানুষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাইদী বলে ডাকে, সম্মান দিয়ে বলে সাইদী সাব। অথচ এই দেলু রাজাকার আম্মা জাহানারা ইমামের নাম বিকৃত করে বলতো জাহান্নামের ইমাম, মহান বিজ্ঞানী কুদরত-ই-খোদাকে বলতো গজব-ই-খুদা। আর ট্রাইবুনালে যখন তার আসল নাম দেলু আর দেইল্যা বলে সম্ভোধন করা হয়, তখন সে আপত্তি জানাতো এভাবে, ‘মাননীয় বিচারক, আমাকে এখানে আনার পর প্রসিকিউটর আমার নাম বিকৃত করে বলেছিলো। আমি আশা করেছিলাম আপনি এর প্রতিবাদ জানাবেন। কিন্তু আপনি সেটা করেননি। আপনি আদেশ দেয়ার সময় একই বিকৃত নাম বলেছেন। ‘সুরা হুজরাতের ১১নং আয়াতে নামের বিষয়ে বলা আছে- কোনও মানুষকে বিকৃত করে ডেকো না।’

দেলু রাজাকারের মুরিদেরা, ভক্তেরা তাকে সাইদী সাব বলে সম্মান দেয়। অথচ দেইল্লা রাজাকারের ভক্তদের মনে থাকে না যে কাউকে ‘জাহান্নামের ইমাম’ কিংবা ‘গজব-ই-খুদা’ বলে ডাকলে সূরা হুজুরাতের ১১ নাম্বার আয়াতের বরখেলাপ হয়। এগুলো তাদের কাছে কোন ধরণের নাম বিকৃতি না।

এসবে প্রমাণ হয় আমরা আসলে জাতি হিসেবে অনেকটাই ধর্মান্ধ আর ভন্ড। সেই জাতির জন্মের সময়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের হিসাব মেটানোর যে দুর্গম যাত্রা শুরু করেছিলেন আম্মা ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ, তা পূর্ণতা পায় ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি! যে দেইল্লা রাজাকার আম্মাকে জাহান্নামের ইমাম বলে গালি দিয়েছিল, তারই শিষ্যরা আমাদের গালি দিয়েছিল নাস্তিক-ধর্মদ্রোহী বলে। আমাদের অপরাধ আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের রক্তের হিসাব চাই, আমরা এই জমিনের সাথে বেইমানী করা গণহত্যাকারী নরপিশাচদের ফাঁসী চাই। আমরা ধর্মের নামে অপরাধীকে দায়মুক্তি দেইনা। তবুও আমাদের এই প্রজন্ম পিছু হটিনি, আম্মাকে যেভাবে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছিল রাজাকারদের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ, ধুঁকে ধুঁকে মারা যেতে হয়েছিল দূরদেশে, মাথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা নিয়ে, সেই আম্মার সন্তান আমাদের নাস্তিক ট্যাগ দিয়ে কুপিয়ে ফালাফালা করা হয়েছিল, জবাই করা ফেলে রাখা হয়েছিল ঠিক ২০ বছর পর… তবুও আমরা দমিনি! আম্মার ছবি বুকে চেপে, সহযোদ্ধাদের কুপিয়ে জবাই করে ক্ষতবিক্ষত ছিন্নভিন্ন লাশ কাঁধে ফেলে রাজাকারের ফাঁসী দিয়ে তবেই ঘরে ফিরেছি… অনেক বড় মুল্য দিতে হয়েছিল, কিন্তু আম্মার স্বপ্ন বৃথা যায়নি।

আম্মা, ওরা ভেবেছিল তোমাকে মুছে দিতে পারবে এভাবেই! অথচ দেখো, যে সুতীব্র জাগরণের বারুদ তুমি ছড়িয়ে দিয়ে গেলে, ঠিক ২১ বছর পর সেই বারুদের স্ফুলিঙ্গেই শুরু হলো দ্রোহের গণজাগরণ! রাজাকারেদের ফাঁসী নিশ্চিত করে তবেই আমরা ঘরে ফিরলাম! তোমাকে ওরা মুছে ফেলতে চেয়েছিল, অথচ দেখো, তুমি জেগে আছো তোমার হাজারো সন্তানের মাঝে, যারা এই জমিন বেঈমান রাজাকারমুক্ত করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞায় অটল… সবসময়… তোমাকে রেখেছি বুকের ভেতর… পরম ভালোবাসায়…

 

কৃতজ্ঞতা ও প্রয়োজনীয় তথ্য সুত্রঃ ১। জননী সাহসিকা জাহানারা ইমাম

২। সাইফ ইমাম জামী’র লেখাঃ কী ছিল আম্মার মধ্যে? : সাইফ ইমাম জামী

৩। মা জাহানারা ইমাম

আম্মার লেখাঃ কৃতজ্ঞতা- অমি রহমান পিয়াল!  অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে? / শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

 

লেখক – কপিরাইটার এবং এক্টিভিস্ট

সারাবাংলা/আরএফ

 

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন