বিজ্ঞাপন

‘নারীরাও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা লালন করে’

February 5, 2019 | 7:46 pm

শোবিজ ক্যারিয়ারের এক যুগ পার করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে পথ চলা শুরু তার। এরপর পেছনে তাকাতে হয়নি। নক্ষত্রের মতো দেদীপ্যমান ছিলেন শোবিজ অঙ্গনে। তারপর হঠাৎ ছন্দপতন। বিয়ে, বিচ্ছেদ আর মামলা বাঁধনকে কিছুটা পেছনে ঠেলে দেয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু বাঁধন হাল ছাড়তে জানেন না। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধে তিনি ঠিকই জয়ী হয়ে ফিরেছেন। সংসারের অধ্যায় আপাতত চুকিয়ে এবার মনযোগ দিতে চান অভিনয়ে। অভিনয় করতে চান নিজের জন্য মানানসই এমন কিছু চরিত্রে। যা তাকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসবে।

নিজের ক্যারিয়ার, ব্যক্তিগত জীবন আর ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে বাঁধন মনখুলে কথা বলেছেন সারাবাংলার  সঙ্গে।  শুনেছেন রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ।   


  • শোনা যায় বাঁধনকে তারকাখ্যাতি প্রভাবিত করে না। কোন অহংবোধ নেই মনের ভেতরে। আসলে কি তাই?

অহংকার জিনিসটা খারাপ-এটা আমরা সবাই জানি। যেকোন মানুষের জন্য এটা একটা খারাপ দিক। তো ওই জায়গা থেকে আমার পারিবারিক শিক্ষা ছিল যে, যত বড় হই না কেনো নিজের ভেতর অহংকার আনা যাবে না। সেই পারিবারিক শিক্ষাটাই আমি এখনও মেনে চলি। আর সেকারণে আমার ভেতর কখনও অহংবোধ কাজ করে না।

বিজ্ঞাপন

আমি এখন যে অবস্থানে আছি সে অবস্থানে এসে অহমিকায় ভোগা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে সব মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করি সবময়। কারণ, আমি বিশ্বাস করি মানুষকে আঘাত করলে একদিন সেই আঘাত বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। এজন্য আমি কাউকে আঘাত করে কথা বলি না। মাটির কাছাকাছি থাকতে চাই।

  • আবার এটাও শোনা যায়, আপনি ঠোঁটকাটা স্বভাবের!

জন্মের পর থেকে যখন কথা বলা শিখি তখন থেকে আমি ঠোঁটকাটা স্বভাবের। একারণে আমার বাবা বলতেন, আমি ছেলে হতে গিয়ে মেয়ে হয়ে গিয়েছি।

আমি ভালো ছাত্রী ছিলাম। ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলাম। আর ক্লাস ক্যাপ্টেন মানে হাতে অনেক ক্ষমতা। সেই সুবাদে মানুষকে অনেক ডমিনেট করতাম। তবে কখনও কোনো অন্যায় হতে দেখলে চুপ থাকতাম না। প্রতিবাদ করতাম। দেখা গেলো অন্যায়টা আমার সঙ্গে হচ্ছে না, অন্যের সঙ্গে হচ্ছে। আমি ভুক্তভোগীর হয়ে কথা বলতাম।

বিজ্ঞাপন

এমনকি আমি যখন লাক্স চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ছিলাম তখন কোনো মেয়ের সঙ্গে কেউ অন্যায় করলে আমি গিয়ে সোচ্চার হতাম। আমি জানতাম এভাবে প্রতিবাদ করলে হয়ত আমাকে প্রতিযোগিতা থেকে বের করে দিতে পারে, তবুও আমি পিছু হটে যাইনি। আমি আসলে এরকমই। মিডিয়াতে সবাই আমার এই গুণটির কথা জানেন।

  • শোবিজে এক যুগ পেরিয়ে গেছে আপনার। পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। আপনার কাছে কি মনে হয় এই  মিডিয়া  আপনার জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে?

একদম তাই। লাক্স চ্যানেল আই প্রতিযোগিতা ছিল আমার জীবনের একটি টার্নিং পয়েন্ট। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমার দ্বিতীয় জন্ম হয়। এরপর থেকে আমাকে কখনও পেছনে তাকাতে হয়নি। তবে আমি ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। তখন আমি নয়টা ধারাবাহিক নাটকের প্রধান চরিত্রের অভিনেত্রী। ওই সময় কাউকে কোন নোটিশ না করে কাজ বন্ধ করে দেই। শুটিংয়ের লোকেরা আমাকে ফোনের পর ফোন করতো। কিন্তু আমি ফোন ধরতাম না। সংসার করার জন্য আমি পাগল হয়ে গেলাম। প্রচণ্ড রকমের অপেশাদার আচরণ করা শুরু করি।

তারপর যখন আমার সংসারে খারাপ সময় যাচ্ছিল। আমি সন্তান নিয়ে পথে বসা। তখন আমার প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়। কোথায় যাবো! কি করবো! বুঝতে পারছিলাম না। সেসময় মিডিয়া আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। তখন ওরকম অপেশাদার আচরণ করার পরও মিডিয়া আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি সেটার জন্য মিডিয়ার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।

চয়নিয়কা চৌধুরী আমাকে ফিরে আসার পর প্রথম কাস্ট করেন। এরপর মাঈনুল হাসান খোকন, জুয়েল মাহমুদ আমাকে কাজ করার সুযোগ করে দেন। চয়নিকা চৌধুরী আমাকে সন্তান নিয়েই কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

বিজ্ঞাপন

আমার খারাপ সময়টায় সার্ভাইভ করেছি শোবিজের টাকা দিয়ে। আমার মেয়ের ভরণপোষণ হয়েছে মিডিয়ার টাকায়। সুতরাং এটা আমাকে বলতেই হবে যে, মিডিয়া আমার জীবনের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।


আরও পড়ুন :  আলাউদ্দিন আলীর পাশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়


  • আপনি একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে শোবিজে পা রাখেন। অনেকে বলে থাকেন; আবার কেউ কেউ কলাম লেখেন যে, সুন্দরী প্রতিযোগিতা নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে। আপনার কি মত এ বিষয়ে?

আমি জানিনা কে কি বলেন! একটি বিউটি কনটেস্টে শুধু চেহারা দেখা হয় না। সেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতা, আচরণ, বাড়তি যোগ্যতাও দেখা হয়। হতে পারে সেটা নাচ, গান, অভিনয়। একটি তথ্য দেই আপনাকে, আমি যখন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ছিলাম তখন আমি নাচ, গানে এক-দুই করে নম্বর পেতাম। কারণ আমি নাচ, গান জানতাম না। তবে আমি আচরণ, শৃঙ্খলায় দশে দশ পেতাম।

সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসা মেয়েরা অনেক সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত হচ্ছে। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় একটি সেগমেন্ট থাকে যেখানে সমাজের জন্য প্রতিযোগিরা কি করবে- সেটা বলতে বলা হয়। এই জিনিসগুলো হয়ত অনেকে জানেন না। কেউ যদি তার ক্যারিয়ারকে সুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিকশিত করতে চায় তাহলে ক্ষতি নেই। আমার কাছে মোটেই মনে হয়না এরকম প্রতিযোগিতা নারীদের পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে।

পেছন ফিরে তাকাতে চান না বাঁধন। এগিয়ে যেতে চান দৃপ্ত পায়ে। ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত


  • সেক্ষেত্রে আপনি কি কোনো সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত আছেন?

‘হিরোজ ফর অল’ নামে একটি এনজিওর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। এটির এখন রেজিস্ট্রেশন হয়নি। হয়ে যাবে শিগগিরই। আমি এই এনজিওতে বোর্ড অব অ্যাডভাইজারের দায়িত্বে আছি। এটার জন্য আমি কোন টাকা নিচ্ছি না। এই এনজিওর মাধ্যমে সমাজের জন্য কাজ করতে চাই। সমাজের প্রতি দায়িত্ব থেকে এই কাজটি করছি।

  • আপনার বিয়ে বিচ্ছেদ, সন্তানের অধিকার নিয়ে মামলা- এসব নিয়ে সবখানে বেশ চর্চা হয়েছে।

সমালোচনা মানুষ করবেই। এটা থামানো যাবে না। তবে সেই সমালোচনা গঠনমূলক হওয়া চাই। কিছু ভুল তো মানুষের জীবনে থাকে। যেমন আমি আমার বয়সের থেকে বাইশ বছরের বড় বয়স্ক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছি। এটা আমার জীবনের সবথেকে বড় ভুল ছিল। সেই ভুলের খেসারত আমি দিয়েছি। মানুষ এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা করেছে। আমি মানছি ওই সময় সমালোচনাটা ঠিক ছিল।

আমার দুঃখ অন্য জায়গায়। ডিভোর্সের পর আমি নানান রকম প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি। সবাই বলেছে, বাঁধন কোটিপতি বয়স্ক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছে। এটা করেছে, ওটা করেছে। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু সনেটকে (বাঁধনের প্রাক্তন স্বামী) কেউ প্রশ্ন করেনি, আপনি কেনো আপনার মেয়ের বয়সি মেয়েকে বিয়ে করলেন? কেনো আপনি সংসার টেকাতে পারলেন না? কেনো আবার বিয়ে করলেন?

এই বিষয়টা আমার কাছে অন্যায় মনে হয়। আমাদের সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক। এখানে পুরুষদের জবাবদিহি করতে হয় না। শুধু ছেলেরা নয়, নারীরাও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা লালন করে। একজন মেয়ে অন্য মেয়েকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তারা বলে, ওই মেয়েটি সংসার বাঁচাতে পারেনি। কই আমি তো পেরেছি। এই ধরনের কথাবার্তা সত্যিই হতাশাজনক।

আমার সংসার ভেঙেছে বলে এই নয় যে আমি ব্যর্থ। আমি প্রত্যক্ষ করেছি, অনেকে আমার সফলতাকে জোর করে ম্লান করে দিচ্ছে কেবলমাত্র সংসার না টেকার কারণে। এটা ঠিক না।

মানুষ আমাকে নিয়ে সমালোচনা করলে আমি প্রতিউত্তরে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমার জায়গায় না গেলে কেউ জানবে না, কেনো আমার সংসার ভেঙেছে! আমি ইততিবাচক মানুষ। সবকিছু সহজভাবে ভাবি।


আরও পড়ুন :  এই ধরনের ছবিতে আর অভিনয় করব না: তাসকিন


  • এখন আপনি সিঙ্গেল মাদার। আমাদের সমাজ সিঙ্গেল মাদারদের জন্য কতোটা উপযুক্ত?

গত পাঁচ বছর ধরে আমি সিঙ্গেল মাদার। এই বিষয়টি নিয়ে আমি ভীষণ ভিতু ছিলাম। ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারতাম না। আমার মনে হতো, সমাজ আমাকে রিজেক্ট করবে। মানে, আমাকে আমার বাচ্চাকে বৈষম্যের শিকার হতে হবে। হেনস্তার সম্মুখীন হবো। এমনকি এটাও মনে হতো, আমার মেয়ের বিয়ে হবে না। এসব চিন্তায় খুব বেশি আতঙ্কিত ছিলাম।

তারপর আমার সমাজ যখন বিষয়টি জানলো তখন আমার চিন্তার ঠিক বিপরীত দিকগুলো ঘটলো। সমাজ আমাকে সুন্দরভাবে গ্রহণ করেছে। সকলের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। বিশেষ করে আমার মেয়ে সায়রার স্কুল থেকে সিঙ্গেল মাদার হিসেবে অনেক সাহায্য পেয়েছি। সায়রার বন্ধুদের পিতা মাতারাও আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। প্রত্যেকে আমাকে এগিয়ে চলার পথে অনুপ্রাণিত করেছেন।

এছাড়া আমার সহকর্মীরাও আমাকে অনেক সাহস জুগিয়েছেন। অনেকে বলেন, মিডিয়া জগতে নাকি প্রকৃত বন্ধু পাওয়া যায় না। এটা সত্য কিনা জানিনা! আমার পাশে এসে অনেক সহকর্মীরা দাঁড়িয়েছেন।

  • শোবিজ ক্যারিয়ার নিয়ে এখন কি ভাবছেন?

এতদিন অনেক কাজ করতে চাইনি। আমাকে ভালো কাজ করতে হবে সেই চিন্তাও কখনও করিনি। অভিনয়টাকে আমি সবসময় চাকরি হিসেবে দেখে এসেছি। সকাল ৮টায় স্পটে গিয়ে রাত ৮টায় বাসায় ফিরব। তারপর আমি অভিনয় নিয়ে কিছুই ভাববো না। আমি ঢাকার বাইরেও শুটিং করতে যেতাম না।

অনেক নাটক, টেলিছবিতে অভিনয় করেছি। তবে আমি এখনো ওভাবে প্রমাণিত ভালো অভিনেত্রী হতে পরিনি । কারণ আমি কোন প্রমাণ দেয়ার সুযোগ পাইনি। যখন হুমায়ূন আহমেদ স্যারের নাটকে অভিনয় করেছি তখন মানুষ আমার অভিনয়ের কারণে আমাকে প্রশংসা করত না। হুয়ামূন আহমেদ স্যারের নাটক হিসেবেই সেটা প্রশংসা পেত। আমি চাই মানুষ আমাকে আমার অভিনয় দেখে প্রশংসা করুক। আঙুল তুলে বলুক, বাঁধন ভালো অভিনয় করেছে। আমি এখন সেই সুযোগটা চাই।

লাল শাড়ীতে বাঁধন ধরা দিলেন প্রতিমারূপে। ছবিঃ আশীষ সেনগুপ্ত


  • ঠিক কেমন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চান?

এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই যেখানে অভিনয়ের জায়গা থাকবে। নিজেকে প্রমাণ করার যথেষ্ট সুযোগ পাবো। আমার সঙ্গে মানানসই চরিত্র হতে হবে। যে চরিত্র পূজা, নুসরাত ফারিয়া করে সে চরিত্রে আমার অভিনয় করা মানাবে না। আমার বয়স অনুযায়ি চরিত্র চাই।

অনেকে মনে করেন, বাঁধন অনেক ফিট আছে ওকে ওমুক চরিত্রটাতে অভিনয় করানো যায়। ফিট আছি বলেই আমাকে পূজা, নুসরাত ফারিয়ার চরিত্রে অভিনয় করতে হবে এমন না।

  • আপনি ডেন্টিস্টও বটে। এই পেশাটায় পুরোপুরি ফোকাস করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমি ইন্টার্নি করছিলাম। বিয়ের পর মিডিয়া ছেড়ে সংসার করার পাশাপাশি ডাক্তারি প্র্যাকটিস করব- এটাই পরিকল্পনা ছিল। আমার দুর্ভাগ্য আমার সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। এখন অভিনয় করে যা আয় করছি তা দিয়ে দিব্যি চলে যাচ্ছে। এখানে আমাকে ইনভেস্ট করতে হচ্ছে না। ডাক্তারি চেম্বার দিতে গেলে ইনভেস্টের প্রয়োজন হয়। এটা আমার মতো একা মেয়ের ক্ষেত্রে কঠিন কাজ। তবে আমি কিছু একটা করার কথা ভাবছি।

ভবিষ্যতে মিডিয়ার ওপর নির্ভর করে চলা কষ্ট হবে। সামনে আরও ভালোকিছু করার জন্য, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চেম্বার নিয়ে বসব। সেটা এ বছর হতে পারে। অথবা আগামী বছর।

বাঁধন ও তার মেয়ে সায়রা। ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত


  • যতটুকু বুঝতে পারি আপনার জীবন সায়রাকেন্দ্রিক। জীবন চলার পথে সবসময় সায়রা-কে কোন তিনটি জিনিস সবসময় মেনে চলতে বলবেন?

প্রথমত সততা। আমি সবসময় সায়রাকে সৎ হওয়ার উপদেশ দেই। বোঝাই, তুমি যখন সৎ থাকবে তখন তোমার কোন বিপদ হবে না। মিথ্যা বললেই বিপদে পড়বে।

দ্বিতীয়ত পরিশ্রম। কোন কিছু অর্জন করতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। সহজে কোনকিছু পাওয়া যায় না। সায়রার সামনে আমি আমাকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করাই। বোঝাতে চাই, আম্মু পরিশ্রম করে বলেই কিন্তু টাকা আয় করতে পারছে। তোমাকেও আম্মুর মতো পরিশ্রমী হতে হবে।

তৃতীয়ত স্বাবলম্বী। মেয়েদের জীবনটা বাবা, স্বামী আর সন্তারের ওপর নির্ভর করে কেটে যায়। কিন্তু আমি আমার মেয়েকে সবসময় স্বাবলম্বী হতে বলি। নিজের অন্নের সংস্থান যেনো নিজেই করতে পারে। কারণ এখনকার স্বামীদের ওপর নির্ভর করা যায় না।


আরও পড়ুন :  তিনটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘যুদ্ধটা ছিল স্বাধীনতার’


  • নতুন করে সংসারী হতে চান?

(একটু ভেবে) আমার ইচ্ছা এখনও হয়নি। গত পাঁচ বছর ধরে আমি সিঙ্গেল। মেয়েকে নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, পুনরায় বিয়ে নিয়ে কিছু ভাবতে পারছি না। এই সময়টা বাবা-মাও আমার পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বিয়ের কথা বলেননি। যদিও তারা এখন চান আমি বিয়ে করি।

বিয়ে নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভালো নয় বলে এটা নিয়ে ভাবতে ভয় পাই। নতুন যাকে বিয়ে করব সে আমার সন্তানকে কিভাবে গ্রহণ করবে সেটাই বড় চিন্তা! আমি বিশ্বাস করি, নতুন কেউ আসলে সে আমার সন্তানের বাবা হয়ে যাবে না। আজকাল যেভাবে বাচ্চারা অ্যাবিউসড হয় তাতে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না। মায়ের বয়ফ্রেন্ড, সৎ বাবার দ্বারা সন্তান অ্যাবিউসড হওয়ার ঘটনা তো হরহামেশাই ঘটছে।

শুধু এসব না। আমার সাথে পথ চলা সহজ না। দূর থেকে নায়িকাদের বিয়ে করার জন্য অনেকের ইচ্ছা হয়। আমার এক্স হাজবেন্ডও তাই করেছিল। সে বিয়ে করার আগে পথ চলতে পারবে কিনা চিন্তা করেনি। আমরা যারা অভিনয় করি তাদের জীবনটা অনেক কঠিন। মানিয়ে নেয়া কষ্টকর।

তবে কোনো পুরুষ যদি আমার, আমার মেয়ের বিশ্বাস অর্জন করতে পারে। আমার জীবন সাথী হওয়ার জন্য কেউ যদি মানসিক, শারীরিক, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয় তাহলে এটা নিয়ে ভেবে দেখব। তাই বলে এখনই ওয়েলকাম জানাচ্ছি কাউকে তা নয়।

 সারাবাংলা/আরএসও/পিএ


আরও পড়ুন :

.   আবারও টিভি পর্দায় ‘হারকিউলিস’

.   ‘ঢাকা’ নিয়ে ঢাকায় আসছেন ‘থর’!

.   অভিষেকের জন্মদিনে ঐশ্বরিয়ার অন্যরকম শুভেচ্ছা

.   জুটি বাঁধছেন কার্তিক আরিয়ান আর অনন্যা পাণ্ডে


Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন