বিজ্ঞাপন

বাণিজ্যমেলা থেকে শুরু হয় সাইমন-দীপার মন বাণিজ্য

February 23, 2020 | 3:13 pm

আহমেদ জামান শিমুল

দীপার সাথে ৯ বছর প্রেমের পর তাকে বিয়ে করেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। তাদের ৬ বছরের সংসারে দুই পুত্র সন্তান আছে। কিন্তু বিষয়টি এতদিন গোপনই ছিল। অতি সম্প্রতি সাইমন নিজেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের বিষয়টি প্রকাশ করেছেন এবং ছবিও প্রকাশ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

স্ট্যাটাস দেওয়ার একদিন পরে প্রেম, বিয়ে এবং ক্যারিয়ার ইস্যুতে সারাবাংলার সাথে কথা বলেছেন সাইমন ও তার স্ত্রী দীপা।

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে সম্পর্কটা কীভাবে হয়েছিলো? কে প্রথম প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সাইমন উত্তর না দিয়ে তার স্ত্রী দীপার হাতে ফোনটি ধরিয়ে দেন।

দীপা জানালেন, তাদের প্রথম পরিচয় ২০০৬ সালে। বাণিজ্যমেলায়।

বিজ্ঞাপন

গল্পটা এরকম—মেলায় সেদিন অনেক ভিড় ছিলো। দীপা তার বোনসহ বিভিন্ন স্টলে ঘুরে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনছিলেন। তারা তখন ছিলেন বিদেশি পণ্যের স্টলগুলোতে। হঠাৎ দীপা দেখেন তার বোন একটা ছেলের হাত ধরে টেন নিয়ে আসছে।
‘এ ছেলে কে?’ দীপা জিজ্ঞেস করেন বোনকে।
‘আপু জানো না ভাইয়াটা না অনেক সহজ-সরল। আমরা যে চুড়ি ১০০ টাকায় কিনেছি, উনি ওই একই চুড়ি ৩৫০ টাকায় কিনেছেন। বিষয়টা দেখে খারাপ লাগায় আমি তাকে দোকানে নিয়ে গিয়ে টাকা ফেরত এনেছি।’

ছেলেটা দেখতে ভীষণ হ্যান্ডসাম আর স্মার্ট। প্রথম দেখায় ভালো লেগে যায় দীপার। তার ভাষায়, ‘বলতে পারেন অনেকটা সিনেমার মত ঘটনাটা। কাউকে দেখে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। বাতাসে চুল উড়ছে, চারপাশের সবকিছু থেমে গেছে। সত্যি বলতে আমার তাকে প্রথম দেখাতেই এতটা ভালো লেগে যায় যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট কোন কথেই বলতে পারিনি।’

বিজ্ঞাপন

এরপর সাইমন ও দীপা পরস্পরকে বিদায় জানিয়ে মেলাতেই অন্যদিকে চলে যান। কিন্তু দীপা তো ‘লাভ এট ফার্স্ট সাইট’র মত প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেছেন। এই ছেলেকে হারালে তো চলবে না। কিন্তু মেলার এ ভিড়ে কীভাবে খুঁজে পাবেন! বুদ্ধি করে মেলার অফিস কক্ষে গিয়ে মাইকিং করালেন তিনি।

মাইকে ঘোষণা করা হলো, দীপা নামের একজনের চুড়ি মিঠু নামের একজনের সাথে অদল-বদল হয়ে গেছে। তিনি যেন কষ্ট করে মাইকিং স্থলে এসে চুড়ি পরিবর্তন করে নিয়ে যান।
এখানে মিঠুর গল্প হলো, সাইমনের সাথে সেদিন তার এক বন্ধু ছিলেন মেলায়। তার নাম মিঠু। দীপা মিঠুর নামই শুনেছিলেন শুধু। তাই তার নাম বলা।

শেষ পর্যন্ত মিঠু আর সাইমন এলেন। দীপা তখন মিঠুর কাছে ২০০ টাকা ধার চাইলেন। মাইকিংয়ের লোকদের দেওয়ার মিথ্যে অজুহাতে টাকা ধার নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিলো টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সাইমনের ফোন নাম্বার নেওয়া। দীপার সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছিলো।

তারপর আলাপ শুরু। মোবাইল ফোনে সাইমনের সাথে কথা চললো অনেকদিন। দুজন মাঝে-সাজে দেখা করেন, ঘুরতে যান। সবই বন্ধু হিসেবে। কিন্তু কেউ কাউকে ভালোবাসার কথা বলেন না।

বিজ্ঞাপন

অবশেষে অনেকদিন পরে সাইমনই জানালেন মনের কথা। দীপা হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে দুবছর লেগেছিলো সাইমনের। অথচ আমি প্রথমদিন থেকেই অপেক্ষা করেছিলাম।’

এরপর প্রায় সাত বছরের প্রেমপর্ব তাদের। তারপর বিয়ে। তাও হয়ে গেছে প্রায় ছয় বছল। কিন্তু বিয়ে সন্তানের খবর লুকিয়ে রাখার কারণ কি?
কারণ চলচ্চিত্রের প্রচলিত ধারণা—নায়ক-নায়িকা বিবাহিত হলে দর্শক কমে যায়। সাইমন বললেন, ‘আসলে আমি যখন দীপাকে বিয়ে করি ততদিনে আমার বেশ কিছু সিনেমা মুক্তি পেয়ে গেছে। ছবিগুলো মানুষ ভালোভাবে নিয়েছিলো। তাই চলচ্চিত্রের পরিচালক-প্রযোজকদের পরামর্শে আমি আমার বিয়ের তথ্য আর প্রকাশ করিনি।’

একই কথা বলে আরেকটু তথ্য যোগ করলেন দীপা। ‘আমাদের পরিবারের আত্মীয়-স্বজন বা চলচ্চিত্রের অনেক পরিচালক-প্রযোজক এমনকি অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা জানতেন বিয়ের কথা।’

সাদিক দম্পতির প্রথম সন্তান সাদিক মোহাম্মদ সাইয়্যান এ বছর থেকে স্কুলে যাচ্ছে। জীবনের প্রথম পরীক্ষা সে প্রথম হয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান সাদিক মোহাম্মদ সাইয়্যার কয়েকবছর পর স্কুলে যাবে। ‘সন্তানরা বড় হচ্ছে। কতদিন লুকিয়ে রাখবো’—বললেন সাইমন।

সবশেষে সংসার ও সন্তান ক্যারিয়ারের জন্য প্রতিবন্ধক না বলে সাইমন ফোন কলটি শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘মানুষের রিজিকের মালিক আল্লাহ্‌। সংসার ও সন্তান তো আর্শীবাদ। অবশ্যই ভালো কিছু হবে।’

সাইমনের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১২ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘জি হুজুর’ ছবিটি দিয়ে। তিনি ২০১৮ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘জান্নাত’ ছবিটির জন্য ‘সেরা অভিনেতা’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

সারাবাংলা/এজেডএস/পিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন