বিজ্ঞাপন

জমেনি আতর-টুপি-জায়নামাজের বাজার

April 5, 2024 | 11:14 pm

কামরুল ইসলাম ফকির, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি রোজার শেষ দিকে এসেও আতর, টুপি আর জায়নামাজের বাজার জমে ওঠেনি। বিক্রেতারা বলছেন অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আতর, টুপি, জায়নামাজের বেচাবিক্রি অনেক কম। তবে ক্রেতারা বলেছেন চলতি বছর আতর, সুরমা, টুপির দামও বেশি।

বিজ্ঞাপন

গত কয়েকদিন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেট, নিউমার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোডের আতর, সুরমা, টুপি ও জায়নামাজের দোকানগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্ত্বরে আতর, সুরমা টুপি, জায়নামাজের মেলা বসেছে।

গত বুধবার সেখানকার দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা হাতেগোনা। কেউ কিনছেন, কেউ দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

সেখানে কথা হয় আতর, টুপি, তসবি বিক্রেতা কামরুল ইসলাম শুভর সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে বেচাকেনা অনেক কম। রোজা শেষ হয়ে যাচ্ছে তারপরও আমাদের বেচাকেনা সেভাবে নেই‌। লাখ টাকার বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করেছি। এখন মনে হচ্ছে পুঁজির টাকাই উঠবে না।’

টুপি বিক্রেতা মোহাম্মদ মাসুম সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন ২২-২৫ হাজার টাকা বিক্রি করলেও এবার মাত্র ৬-৭ হাজার টাকা বিক্রি করছি। শেষ সময়ে বেচাকেনা কিছুটা বাড়বে এখন এই আশাতেই আছি।’

বিজ্ঞাপন

সেখানে টুপি কিনতে আসা মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি ঈদে আমি এখান থেকে বাবা, ছোট ভাই ও নিজের জন্য টুপি কিনে থাকি। এবার সবাই টুপির দাম গতবারের চেয়ে একটু বেশি চাচ্ছেন। এখন দরদাম করে দেখছি একটু কম যেখানে পাবো সেখান থেকেই কিনে নেব।’

আতর সুরমা বিক্রেতা মিলন মাহমুদের ভাষ্য একটু ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘এবার কাস্টমার কম। এখন রোজার একেবারে শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি তখন যদি একটু বেচাকেনা হয়।’

নিজের পরিবারের ঈদের কেনাকাটার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার সব কিছুরই দাম বাড়তির দিকে। সেটির প্রভাব হয়তো এখানেও পড়েছে। আর এই ঈদে সবাই জামা কাপড় বেশি কিনে থাকেন। শেষ সময়ে এসে আতর, টুপি, জায়নামাজ কিনে থাকেন। এবার অনেকেরই জামা কাপড় কিনতে গিয়েই বাজেটে টান পড়েছে। আর শেষ সময়ে এসে আতর, টুপির দাম একটু বেশি, এমনটা শুনে অনেকেই কম কিনছেন।’

বিজ্ঞাপন

গত মঙ্গলবার নিউ মার্কেট বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে আতর, সুরমা, টুপি ও জায়নামাজ বিক্রেতা মোহাম্মদ ফয়সালের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার দাম একটু বেড়েছে। জায়নামাজ প্রতিটি গড়ে ১০০ টাকা করে বেড়েছে। বিভিন্ন ব্রান্ডের আতর-সুরমার দামও কিছুটা বেড়েছে। বেচাকেনা গতবারের চেয়ে অনেক কম।’

সেখানে মিরপুর থেকে জায়নামাজ কিনতে আসা মিনহাজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘দুটো জায়নামাজ কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম তো বেশি চাচ্ছে। এখন ভাবছি দুটোর পরিবর্তে একটি কিনব।’

একই দিনে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের আতর-টুপি বিক্রেতা মনির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার বেচাকেনা মোটামুটি। তবে গতবারের চেয়ে কম। আশা করছি রোজার শেষ দিকে একটু বেচাকেনা বাড়বে।’

গাউসিয়া মার্কেটের সামনের ফুটপাতের আতর-টুপি বিক্রেতা রাজিব মিয়া জানান, এবার গরমের মধ্যে ঈদুল ফিতর হতে যাচ্ছে। গরমের কারণে বাজারে সবচেয়ে বেশি চলে জালি টুপি। এবার জালি টুপির বিক্রিও তেমন হচ্ছে না।

এবার রাজধানীর বিভিন্ন টুপির দোকানগুলোতে পাকিস্তানি, তুর্কি, চায়না, দেশীয় টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব দোকানে ৫০ থেকে ৮০০ টাকা দামের টুপিই বেশি রয়েছে। তবে ১০০-২০০ টাকা দামের টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন গতবারের চেয়ে এবার প্রতি টুপিতে ২০-১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

এবার বাজারে আসা দেশীয় ব্র্যান্ডের প্যাকেট করা বিভিন্ন আতর ৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। এ বাইরে অ্যারাবিয়ান, দুবাই, ভারতীয়, সৌদি আরব, মিশরসহ বিভিন্ন দেশের শতাধিক ধরনের আতর বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম ৫০০ থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বিক্রেতারা জানান ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দামের মধ্যে আতর বেশি বিক্রি হচ্ছে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন