বিজ্ঞাপন

‘ভারতের বিপক্ষে খেলা হলেই কেন এমন হবে?’

September 15, 2019 | 6:27 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

জয় থেকে তখন বাংলাদেশ মাত্র ৬ রান দূরে। হাতে দুই উইকেট। দুজনই ক্রিজে থিতু। এক প্রান্তে তানজিম হাসান সাকিব, অপর প্রান্তে রাকিবুল হাসান। তাদের ব্যাটেই প্রথম এশিয়া কাপ শিরোপা স্বপ্নের জয়ে বিভোর ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। কিন্তু আচমকাই আম্পায়ারের একটি ভুল সিদ্ধান্ত তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে চুড়মার করে দিল।

বিজ্ঞাপন

৩২.৩ ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের পায়ে বল লাগিয়ে আনকোলেকার জোরালো আাবেদন তোলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার আঙুল উঁচিয়ে জানিয়ে দেন, আউট। ওই যে চাপে পড়ল লাল সবুজের যুবারা। সেই চাপ আর সামলে উঠতে না পারায় ওই ওভারের শেষ বলে কোলেকারের পঞ্চম শিকার হন শাহিন। তাতে শিরোপা স্বপ্নের সলিল সমাধিও হয় বাংলাদেশের।

অথচ টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গেছে আলকোলেকারের বলটি তানজিমের ব্যাটে লেগেছিল। এমনকি টিভিতে বল ব্যাটে লাগার শব্দও শোনা গেছে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তানজিমকে আউট বলে দিলেন আম্পায়ার! বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অফস্পিনার শামীম পাটোয়ারীর দুঃখটা এখানেই। আম্পায়ার এমন আউট কেন দিলেন! তার প্রশ্ন- বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের খেলা হলেই কেন এমন হবে?

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপ শেষে দেশে ফিরে হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, ‘অসাধারণ বোলিং করেছে আমাদের বোলাররা। অনেক ভালো বোলিং করেছে। সবকিছুতেই ভালো হয়েছে আমাদের। আপনারা সরাসরি খেলা দেখেছেন। আপনারা বুঝতে পেরেছেন ব্যাপারটা। আপনারা আমাদের চাইতেও ভালো দেখেছেন। তখন তো আমরা আর দেখি নাই। আমাদের সাথে খেলা হলেই কেন এমন হবে? ভারতের বিপক্ষে খেলা হলেই দুইটা-একটা বাজে আউট দিয়ে খেলাটা শেষ করে দেওয়া হয়।’

বিজ্ঞাপন

বড় আসরে বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথে পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিং আগেও দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। চার বছর আগে ফিরে যাই ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই কলঙ্কিত আম্পায়ারিংয়ে মাশরাফিদের স্বপ্নযাত্রার সমাপ্তি ঘটেছিল।

১৯ মার্চের ওই ম্যাচের ৪০তম ওভারে রুবেল হোসেনের চতুর্থ বলে ভারত ব্যাটিংস্তম্ভ রোহিত শর্মা ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দিলে তা তালুবন্দি করেন ইমরুল কায়েস। তখন তার ব্যক্তিগত রান ৯০। কিন্তু ফিল্ড আম্পায়ার আলীম দার ফুলটস বলটি নো ডেকে দিলেন! থার্ড আম্পায়ারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তিনি ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।

এটি ছিলে ওই ম্যাচের কলঙ্কিত আম্পায়ারিংয়ের দ্বিতীয় ঘটনা। প্রথমটি ঘটেছিল ৩৪তম ওভারে। সুরেশ রায়নার বিরুদ্ধে এলবি’র আবেদন করেছিলেন মাশরাফি। আশ্চর্যজনকভাবে সেই আউটটিও দেননি ইয়ান গোল্ড। কেন আশ্চর্যজনক বলছি? রিপ্লেতে দেখা গিয়েছিল বল পিচআপ করে মিডল স্ট্যাম্পের ওপরেই ছিল।

বিজ্ঞাপন

সন্দেহের বাষ্প উড়েছিল ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি হাঁকানো টাইগার ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউট নিয়েও। আম্পায়ারদের এমন অমার্জনীয় ভুলের প্রতিবাদে সেদিন গ্যালারির সমর্থকেরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই পুনরাবৃত্তি গতকাল দেখা গেল কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে।

কিন্তু তাই বলে ৫০ ওভারে ১০৭ রান করা গেল না? সংবাদ মাধ্যমের এমন প্রশ্নে অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করেননি শামীম। ৩৩ ওভারে ১০১ রানে গুটিয়ে যাওয়াকে লজ্জার বলেই আখ্যা দিলেন, ‘এটা বলার মতো না। এটা আসলেই অনেক লজ্জার বিষয়।’

শুধু এশিয়া কাপেই কেন? গেল মাসে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও এই ভারতের কাছেই ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। দুই মাসের ব্যবধানে একই দলের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় হার! এর ব্যাখ্যা কি? বিশদ ব্যাখায় না গিয়ে মনস্তাত্বিক চাপকেই সামনে তুলে আনলেন শামীম, ‘প্রতিবারই এমন হয়, যে ভারতের কাছে আমরা জেতা ম্যাচগুলো হেরে যাই। বারবারই জেতা ম্যাচগুলো হারছি। এটা তো অবশ্যই। হয়তো সাইকোলজিক্যাল কিছু একটা কাজ করে ঐ সময়। ভারত ছাড়া অন্য কেউ হলে কি হতো এটা বলাতো যায় না। আপনি যদি আগের সিরিজগুলো দেখেন, আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। সবকিছুতেই আমাদের উন্নতি হচ্ছে। এশিয়া কাপে আমরা ভালোই খেলেছি। খারাপ যে খেলেছি তা না। ম্যাচটি দুর্ভাগ্যবশত হেরে গিয়েছি। কিছু করার নেই।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন