April 19, 2018 | 11:02 pm
জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকাঃ ফুটবলার পরিচয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে অসংখ্য বিদেশি নাগরিক। কাজ শেষে কেউ কেউ দেশে ফিরেছেন আবার বেশিরভাগ ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পরেও রাজধানীসহ দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছেন। দেশে ফিরে যাওয়ার কোনো নামও নেই। কেউ কেউ ‘খ্যাপ’ খেলে জীবিকা নির্বাহ করছেন!
‘‘দেশের ফুটবলের হাল-বেহাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন শুরু করেছে সারাবাংলাডটনেট। পেশাদার লিগসহ ফুটবলের হালচাল স্থান পাবে প্রতিবেদনে। ঘরোয়া ফুটবলে দেশি-বিদেশি ফুটবলারদের নিয়ে থাকছে নানান আয়োজন। ফুটবলারদের অপকর্ম-কর ফাঁকি-অপরাধ-অবৈধ আবাস নিয়ে থাকছে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে। আজকে দ্বিতীয় প্রতিবেদন’’
এমন সংখ্যা নেহাতই কম নয় যারা ফুটবলার পরিচয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে এখানেই ঘাঁটি গেড়েছেন! দেশের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার ‘জটিলতাকে’ পুঁজি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে যাচ্ছেন ফুটবলার (নামধারী) এই বিদেশিরা। পরে অপরাধ জগতেও জড়িত হওয়ার বেশ কয়েকটি নজির লক্ষ্য করা গেছে।
তবে, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তাদের আটক করার ক্ষেত্রে পুলিশের তৎপরতাও চোখে পড়ে কম। যার ফলে দিনদিন অবৈধভাবে থাকা এদের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
এ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। বহুবছর আগে থেকে দেশের ফুটবলারও এ অভিযোগ করে আসছেন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে বিদেশিদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়ে দুই পাতার একটি চিঠিও দিয়েছিলেন দেশের জুয়েল রানা, নকিব, মনিসহ আরও অনেক ফুটবলার।
তাতে খেলোয়াড়রা আশঙ্কা উল্লেখ করেছিলেন, এদের আনাগোনা কমিয়ে দেশে ফুটবলের একটা সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
‘এই সমস্ত আফ্রিকান খেলোয়াড়েরা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খ্যাপ খেলে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে। এই অর্থ তারা অবৈধভাবে তাদের দেশে প্রেরণ করছে। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
দেশের একেবারে গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ছে এই ফুটবলাররা। খ্যাপ খেলে বেড়ানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিপক্ষে। এ বিষয়েও খেলোয়াড় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, মূলত নিচুমানের কিছু খেলোয়াড় এদশকে রুটি-রুজির স্থান বানিয়ে সারাবছরই বাংলাদেশের অবস্থান করে। ঢাকার বাইরে ৫-৭ হাজার টাকায় খ্যাপ খেলে বেড়ায়। মাসে অন্তত ৮-১০ টা খ্যাপ খেললেই তাদের জন্য অনেক। এদের অনেকের ভিসার মেয়াদ পার হলেও থেকে যায় অবৈধভাবে। কীভাবে এরা এখানে আসে সেটা অনেকের কাছেই প্রশ্ন।’
ফুটবলারদের অভিযোগ, ‘স্থানীয় প্রশাসন এদের ব্যাপারে খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেয়নি কখনোই।’ এ সুযোগে প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে অবৈধ এই ফুটবলাররা। নারী কেলেংকারিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।
পেশাদার হলে এমনটা ঘটতো না বলে জানান বাংলাদেশ ফুটবল জাতীয় দলের সাবেক কোচ মারুফুল হক, ‘যারা এদেশে আসছে তারা কিন্তু সবাই প্রফেশনাল খেলোয়াড় না। তারা হয়তো কোথাও খেলেছে, বা নিজে নিজে খেলে এসেছে, তাই তাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। খেলার সুযোগ নেই। তাই এসব কাজে জড়িয়ে পড়ছে। সে যদি প্রফেশনাল খেলোয়াড় হয় তাহলে কখনো এসব কাজে যাবে না।’
এ বিষয়ে মাথাব্যথা নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেরও (বাফুফে)। ফেডারেশনের সেক্রেটারি আবু নাঈম সোহাগ জানান, ‘এ বিষয়টি দেখবে প্রশাসন। আমাদের কিছু করার নেই।’
বিদেশি ফুটবলারদের অবৈধভাবে বসবাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ! দেশে অনু্প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করতে হবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সারাবাংলা/জেএইচ