বিজ্ঞাপন

কুমিল্লায় ফল ঘোষণার শেষ পর্যায়ে হঠাৎ উত্তেজনা

June 15, 2022 | 10:05 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেট

কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার শেষ পর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও ফলাফল পরিবেশন কেন্দ্রে হঠাৎ উত্তেজনা দেখা দেয়। নির্বাচনের ফলে যখন প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সদ্য সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের মধ্যে যখন ভোটের ব্যবধান সরল দোলকের মতো একবার এদিকে, একবার ওদিকে ঘুরছিল; ঠিক এই সময়ই এমন উত্তেজনার জের ধরে ফল ঘোষণা কিছু সময়ের জন্য বন্ধও রাখতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ জুন) রাত ৯টার দিকে এই নির্বাচনের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্রের ফল রিটার্নিং কার্যালয় থেকে ঘোষণা করার পর থেকেই এই উত্তেজনা শুরু হয়। বেশকিছু সময় পরে ১০১ কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়। ওই সময় টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে সাক্কু এগিয়ে ছিলেন ৬২৯ ভোটে।

এর আগে, বুধবার রাত ৮টার দিকে মনিরুল হক সাক্কুর সমর্থকরা শিল্পকলা একাডেমির দিকে আসতে থাকেন। এসময় মনিরুল হক সাক্কুর নামে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

এর কিছু সময় পর কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, এখনো কিছু কেন্দ্রের ফলাফল বাকি আছে। কেন্দ্র থেকে ফলাফল আসতে দেরি হওয়ায় চূড়ান্ত ফলাফল জানানো সম্ভব হচ্ছ না। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ফলাফল জানানো হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের পর এসময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাক্কুর সমর্থকেরা। তারা দ্রুত ফলাফল ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই শিল্পকলা একাডেমিতে উপস্থিত হন মনিরুল হক সাক্কু।

বিজ্ঞাপন

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে মনিরুল হক সাক্কু তার নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ফলাফল ঘোষণা করার মঞ্চের সামনে বসে পড়েন। আধা ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের সমর্থকরা। এসময় তারা ফলাফল ঘোষণা করার মঞ্চের সামনে প্রবেশ করার চেষ্টা করলেও পুলিশের বাধার মুখে সেখানে যেতে পারেননি।

পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী নির্বাচনের চূড়ান্ত বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন। বেসরকারি এই ফল অনুযায়ী, ১০৫টি কেন্দ্রের সবগুলোতে রিফাত নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। অর্থাৎ মাত্র ৩৪৩ ভোটে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন রিফাত। আর তৃতীয় স্থানে থাকা নিজাম উদ্দিন কায়সার পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, বুধবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে। ১০৫টি কেন্দ্রের সবগুলোতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দিয়ে ভোট নেওয়া হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিক থেকে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও ফলাফল পরিবেশন কেন্দ্র থেকে ফলঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়।

এর আগে, বৃষ্টির বাগড়ায় দিনভর ভোটারদের উপস্থিতির গতি কখনোই খুব একটা বেশি হতে পারেনি কুমিল্লা সিটিতে। যে কারণে বিকেল ৪টায় যখন ভোটগ্রহণের সময় শেষ, তখনো অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই সময় পর্যন্ত অবশ্য যারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন, তাদের ভোট নেওয়া হয় ৪টার পরও।

কুসিকের তৃতীয় এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন পাঁচ জন। এর আগের দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে ভোটে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। এবারে তিনি আর জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারলেন না।

এছাড়া এবারে কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন